কোভিড-১৯: দক্ষিণ এশিয়ায় আক্রান্ত ২২ হাজার

ভারতে নতুন রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় ঘনবসতিপূর্ণ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা ২২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। 

>>রয়টার্স
Published : 17 April 2020, 04:06 PM
Updated : 17 April 2020, 04:06 PM

আয়তন ও জনসংখ্যায় এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দেশ ভারতে ইতোমধ্যে ১৩ হাজার ৪৯৫ জনের মধ্যে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

রোগের বিস্তার বাড়তে থাকায় ভারত মহাসাগরের ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের রাজধানীতেও চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক পঞ্চমাংশের বসবাস এই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। এ এলাকায় বিপুল সংখ্যক মানুষ বস্তিতে থাকে বলে এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে আসন্ন দিনগুলোতে দক্ষিণ এশিয়া করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নতুন ক্ষেত্রে হয়ে উঠতে পারে বলে সতর্ক করে আসছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

১৩৫ কোটি মানুষের দেশ ভারতে চার সপ্তাহ ধরে লকডাউন চলছে এবং ইতোমধ্যে এর মেয়াদ ৩ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তাপরও শুক্রবার সেখানে সাতশর বেশি নতুন রোগী ধরা পড়েছে।

ভারতের সোয়া সাতশ জেলার মধ্যে এক পঞ্চমাংশকে ইতোমধ্যে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করা হয়েছে। দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, কলকাতা ও হায়দ্রাবাদেও বিপুল সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত। 

অবশ্য লকডাউনের কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধির গতি গত কয়েক দিনের তুলনায় কিছুটা ধীর হয়েছে বলে ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের ভাষ্য।

তারা বলছেন, লকডাউনের আগে আক্রান্তের সংখ্যা তিন দিনের মধ্যে বেড়ে দ্বিগুণ হচ্ছিল, এখন লাগছে ৬.২ দিন।

লকডাউনের মেয়াদ বাড়লেও আগামী সপ্তাহ থেকে কিছু এলাকায় খামার ও কারখানায় কাজ শুরুর পাশাপাশি বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করার ঘোষণা দিয়ে দেশটির সরকার।

দেশ

আক্রান্ত

মৃত্যু

ভারত

১৩৪৯৫

৪৫২

পাকিস্তান

৭০২৫

১৩৫

বাংলাদেশ

১৮৩৮

৭৫

আফগানিস্তান

৯০৬

৩০

শ্রীলঙ্কা

২৩৮

মালদ্বীপ

২৮

--

নেপাল

১৬

--

ভুটান

--

এদিকে গত তিন দিনে আটজনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় শুক্রবার মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে ১৪ দিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৮ জন।

পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল মালদ্বীপের সরকার আগেই সব ধরনের যোগাযোগ ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিল।

কিন্তু সাড়ে চার লাখ মানুষের এই দেশে ভাইরাসের বিস্তার আরও বাড়ার আশঙ্কায় মালেতে এখন সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

১৬ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশেও লকডাউন চলছে গত ২৬ মার্চ থেকে। কিন্তু করোনাভাইরাস ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে দুই তৃতীয়াংশ জেলায়।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শুক্রবার ১৫ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে, যা এক দিনের হিসেবে সর্বোচ্চ। তাতে মৃতের মোট সংখ্যা পৌছেছে ৭৫ জনে।

আরও ২৬৬ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় আক্রান্তের মোট সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৮৩৮ জন।

করোনাভাইরাস পরীক্ষার স্বল্প হার এ অঞ্চলের দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের একটি বড় বিষয়। ভারত পরীক্ষার সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়িয়ে বৃহস্পতিবার ২৭০০০ নমুনা পরীক্ষা করতে পেরেছে। কিন্তু অন্য অনেক দেশের তুলনায় তা কম।

ভারত এখন প্রতি দশ লাখে ২০৩ জনকে পরীক্ষা করতে পারছে;  আর বাংলাদেশ করছে ১১৭ জন।

অন্যদিকে ব্রাজিল প্রতি দশ লাখে ২৯৬ জনকে, যুক্তরাষ্ট্র করছে ৯ হাজার ৮৬৬ জনকে, ইতালি করছে ১৮ হাজার ৪৮১ জনকে পরীক্ষা করা হয়েছে।