ভারতের ৯৩ বছরের বৃদ্ধের কাছে করোনাভাইরাসের হার

প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কেরালার ৯৩ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে জানিয়েছেন ভারতীয় চিকিৎসকরা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 April 2020, 11:42 AM
Updated : 1 April 2020, 12:03 PM

মাসখানেক আগে তিনি ও তার ৮৮ বছর বয়সী স্ত্রী কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছিলেন। দুজনই সেরে উঠেছেন, তাদেরকে কয়েকদিনের মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

কেরালার এ দম্পতি তাদের ইতালিফেরত মেয়ে ও মেয়েজামাইয়ের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছিলেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।  

বিমানবন্দরের স্ক্রিনিং এড়িয়ে বাড়ি ফেরা এ দুই প্রবাসী সেসময় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরেও স্থান করে নিয়েছিলেন।

কর্মকর্তারা পরে ইতালিফেরত স্বামী-স্ত্রীর খোঁজ বের করতে সক্ষম হলেও ততক্ষণে ওই দুইজন তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও কোভিড-১৯ ছড়িয়ে দিয়েছিলেন।

বয়সজনিত নানান সমস্যা থাকা সত্ত্বেও কেরালার বৃদ্ধ দম্পতির সেরে ওঠার ঘটনায় দেশটির স্বাস্থ্যকর্মীরা ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছেন; করোনাভাইরাসকে পরাজিত করার এ ঘটনা দেশটির বিভিন্ন দৈনিকেও জায়গা করে নিয়েছে।

৯৩ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধের উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসজনিত শারিরীক জটিলতাও ছিল। বিশ্বের অন্যান্য স্থানে এ ধরনের সমস্যায় থাকা ব্যক্তিদের কোভিড-১৯ এ মৃত্যুহার অনেক বেশি।

প্রথম দিকে কেরালার এই বৃদ্ধের অবস্থাও বেশ খারাপ হয়ে পড়েছিল। তাকে ২৪ ঘণ্টা ভেন্টিলেটর দিতে হয়েছিল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এরপরই তার নাটকীয় উন্নতি ঘটতে থাকে।

কোত্তায়াম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের যে চিকিৎসকরা ওই দম্পতির দেখভাল করতেন তাদের অন্যতম সদস্য ড. আরপি রেনজিন জানান, তিন সপ্তাহ আগে ওই দম্পতি যখন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তখন তাদের অবস্থা বেশ জটিল ছিল। 

প্রথমদিকে তাদেরকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে আলাদা করে রাখা হয়েছিল; স্বাস্থ্যকর্মীরা পরে হাসপাতালে এমন দুটি কক্ষ খুঁজে পান, যা কাঁচ দিয়ে আলাদা করা হয়েছে। আক্রান্ত দম্পতিকে তখন ওই দুই কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়, যেন তারা একে অপরকে দেখতে পারেন।

“আমরা যখন তাদের সেখানে নিয়ে যাই, তারা খুশি হয়েছিলেন,” বলেন ড. রেনজিন।

হাসপাতালের কর্মীরা চিকিৎসাধীন ওই দম্পতির এমনই ভক্ত হয়ে গিয়েছিল যে তারা তাদেরকে ‘বাবা, মা’ নামেও ডাকা শুরু করে, জানান এ চিকিৎসক।

বুধবার পর্যন্ত ভারতে এক হাজার ২৩৮ জনের শরীরে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে; মারা গেছে ৩৫ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ১২৩ জন সেরে উঠেছেন বলেও জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।