করোনাভাইরাস: আতঙ্কের আবহে ভারতজুড়ে লকডাউনের প্রস্তুতি

করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় গোটা দেশে আতঙ্কের আবহ ছড়িয়ে পড়ায় ভারতের ২৮টি রাজ্য ও আটটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে ২২টি ৩১ মার্চ পর্যন্ত সম্পূর্ণ অথবা আংশিক লকডাউনে যাচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2020, 06:17 AM
Updated : 23 March 2020, 06:23 AM

এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী এসব রাজ্য ও অঞ্চলগুলো হল, মহারাষ্ট্র, কেরালা, দিল্লি, গুজরাট, উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, কর্নাটক, তেলেঙ্গানা, রাজস্থান, অন্ধ্র প্রদেশ, তামিল নাডু, পাঞ্জাব, জম্মু ও কাশ্মীর, লাদাখ, পশ্চিমবঙ্গ, চন্ডিগড়, ছত্তিশগড়, হিমাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, পাদুচেরি ও উত্তরখণ্ড।

এর পাশাপাশি করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতা, চেন্নাই, বেঙ্গালুরুসহ দেশটির ৮০টি শহর পুরোপুরি লকডাউনে যাচ্ছে বলেও জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমটি।  

ভারতজুড়ে ট্রেন, মেট্রো ও আন্তঃরাজ্য বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। অধিকাংশ রাজ্যেই ইতোমধ্যে মার্কেট, মল, সিনেমা, স্কুল, কলেজ ও জিম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অনেক রাজ্যে ১৪৪ ধারা জারি করে পাঁচ জনের বেশি জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

রোববার সকালে ভারতের মন্ত্রিসভা সচিব সবগুলো রাজ্যের প্রধান সচিবদের সঙ্গে ভিডিও বৈঠক করার পর যে শহরগুলো লকডাউনে যাচ্ছে সেগুলোর তালিকা প্রকাশ করা হয়।

দিল্লির সব মার্কেট বন্ধ করার পর সীমানাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন। সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৬টা থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত শহরটি লকডাউন থাকবে বলে ঘোষণা করেছেন তিনি।

এ সময় দিল্লি থেকে ও দিল্লিগামী সব ফ্লাইট বন্ধ থাকবে বলে তিনি ঘোষণা করলেও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার তা অগ্রাহ্য করেছে বলে এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

লকডাউন চলাকালে ভারতের রাজধানীতে ক্যাব, ট্যাক্সি, অটোরিক্সা চলাচল বন্ধ রাখার পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলও বন্ধ থাকবে। শুধু পুলিশ, স্বাস্থ্য, দমকল, কারাগার, বিদ্যুৎ, পানি, ফার্মেসি, পেট্রলপাম্প ইত্যাদির মতো ২৪টি জরুরি বিভাগের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

“অস্বাভাবিক সময়গুলো অস্বাভাবিক পদক্ষেপ গ্রহণের ডাক দেয়,” এক টুইটে বলেছেন কেজরিওয়াল।

কর্নাটক জানিয়েছে, লকডাউন চলাকালে মুদি দোকান, খাবারের দোকান, দুর্ধ, মাছ, মাংস ও সব্জির দোকান খোলা থাকবে।

তেলেঙ্গানা নিজেদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে গণপরিবহন নিষিদ্ধ করেছে। জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য গোয়া পর্যটকবাহী বাস ও দশনার্থীদের দল নিষিদ্ধ করেছে।

অন্ধ্র প্রদেশ সবাইকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ঘরবন্দি থাকার নির্দেশ দিয়েছে। গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত যানবাহন বন্ধ থাকবে আর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলো হোম ডেলিভারি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রাজ্যটির সরকার।

এ সময়জুড়ে গুজরাট ও উত্তর প্রদেশের অনেক এলাকাই লকডাউনের আওতায় থাকবে।

ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় বিভিন্ন এলাকায় আরও বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, হচ্ছে।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, রোববার স্থানীয় সময় রাত ১১টা পর্যন্ত দেশটিতে কভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯৬ জন এবং মৃতের সংখ্যা ৭ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৪১ জন বিদেশি এবং সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা মহারাষ্ট্রে, তারপর কেরালা ও দিল্লিতে।