ভারতে ট্রেন-মেট্রো-বাস চলাচল বন্ধ, দিল্লিতে নিষিদ্ধ ফ্লাইট

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ভারতজুড়ে সমস্ত যাত্রিবাহী ট্রেন পুরোপুরি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কলকাতার মেট্রো পরিষেবাও রোববার মধ্যরাতের পর থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। লকডাউনের মতো পদক্ষেপ নিয়েছে দিল্লিও।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2020, 10:41 AM
Updated : 22 March 2020, 03:12 PM

দিল্লিতে বন্ধ করা হয়েছে বিমানবন্দর, নিষিদ্ধ করা হয়েছে ফ্লাইট। সোমবার ২৩ মার্চ ভোর ৬টা থেকে ৩১ মার্চ মধ্যরাত পর্যন্ত জরুরি পরিষেবা ছাড়া রাজধানীর সমস্ত দোকানপাট, অফিস বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে গণপরিবহণ ব্যবস্থা। রোববার সন্ধ্যায় এক সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।

এনডিটিভি জানায়, ভারতে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে। রোববার মৃত্যু হয়েছে আরও দুই করোনাভাইরাস আক্রান্তের। বিহার এবং মুম্বাইয়ে দুইজনের মৃত্যু নিয়ে ভারতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ জনে।

রেল মন্ত্রণালয় জানায়, ৩১ মার্চ পর্যন্ত মেল, এক্সপ্রেস, প্যাসেঞ্জার, লোকাল-সহ সব রকম যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধ থাকবে।কলকাতা ও শহরতলীগুলোতে লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো ও ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো মধ্যরাতের পর থেকে বন্ধ হবে। এ সমস্ত পরিষেবা বন্ধ থাকবে আগামী ৩১ মার্চ মধ্যরাত পর্যন্ত। আন্তরাজ্য বাস পরিষেবাও বন্ধ করা হয়েছে। তবে বন্ধ থাকছে না পণ্য পরিবহণ কিংবা মালগাড়ি চলাচল।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনতা কারফিউ এর ডাকে রোববার ভারতেজুড়ে ১৪ ঘণ্টার সেলফ আইসোলেশন পালন করেছে মানুষ। জনতা কারফিউয়ের জন্য এমনিতেই এদিন সব যাত্রীবাহী ট্রেন বাতিল ছিল। বাতিল হয়েছে বহু দূরপাল্লার ট্রেনও। লোকাল ট্রেনের সংখ্যাও কমানো হয়েছে অনেকাংশে। শুধুমাত্র দূরপাল্লার যে ট্রেনগুলো ছেড়ে গিয়েছিল সেগুলোই এদিন চলেছে।

 ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ’ রোববার জানিয়েছে, করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৪১। ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে একাধিক রাজ্যে ‘লকডাউন’ শুরু হয়েছে। এ পরিস্থিতিতেই সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ট্রেন পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হল।

৩১ মার্চ পর্যন্ত লকডাউন করা হল দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গসহ গোটা দেশের ৭৫ জেলা। এই সময়ের মধ্যে দিল্লিতে সব ফ্লাইটই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বন্ধ থাকবে সমস্ত ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, “লকডাউন চলাকালে দিল্লির সীমান্ত বন্ধ রাখা হবে। তবে জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করা হবে।” মুদি দোকান, দুধের দোকান, ওষুধের দোকান এবং পেট্রোল পাম্প লকডাউনের আওতার বাইরে থাকবে। তাছাড়া লকডাউনে জরুরি প্রয়োজনে কোনও ব্যক্তি বাড়ির বাইরে বেরলো তাতে বাধা দেওয়া হবে না। তবে লকডাউনের সময় সরকারি কয়েকটি বাস এবং জরুরি পরিষেবা ছাড়া আর কোনও গাড়িকে পথে নামতে দেওয়া হবে না।

ওদিকে, পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া আন্তর্জাতিক সীমানাও কার্যত সিল করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে দোকনপাট। ভিন্ন রাজ্য থেকে বাস আসাযাওয়া বন্ধ হচ্ছে মধ্যরাত থেকেই। আর সোমবার সকাল ৬টা থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে সমস্ত নাইটক্লাব, পানশালা, রেস্তরাঁ, মাসাজ পার্লর, বিনোদন পার্ক, মিউজিয়াম এবং চিড়িয়াখানা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।