বিবিসি জানায়,ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার। ভুজ শহরের শ্রী সাহাজানন্দ বালিকা ইনস্টিটিউট(এসএসজিআই)এর বিরুদ্ধে অভিযোগের এ আঙুল উঠেছে।
কলেজটি পরিচালনা করে ধনাঢ্য এবং রক্ষণশীল হিন্দু গোষ্ঠী স্বামীনারায়ণ সম্প্রদায়ের মন্দিরের অনুগামীরা।এ সম্প্রদায়ের নীতি অনুযায়ী, মন্দির এবং রান্নাঘর প্রাঙ্গনে ঋতুমতী নারীদের প্রবেশাধিকার নেই, এমনকী অন্য ছাত্র ছাত্রীদের স্পর্শও করতে দেওয়া হয় না।
খাওয়ার সময় সবার থেকে আলাদা হয়ে বসতে হয়, নিজেদের থালা নিজেরই পরিষ্কার করতে হয় এবং ক্লাসরুমেও তাদেরকে শেষ বেঞ্চে বসতে হয়।
গত সোমবার হোস্টেলটির এক কর্মকর্তা কলেজের অধ্যক্ষর কাছে অভিযোগ করেন, বেশ কিছু মেয়ে ঋতুস্রাবের সময় ধর্মীয় নীতি লঙ্ঘন করছে।
এরপরই ছাত্রীদেরকে ক্লাস থেকে টেনে বের করে বাথরুমে নিয়ে তাদের ঋতুস্রাব চলছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়।ছাত্রীদের পরিধেয় পায়জামা ও অন্তর্বাস খুলিয়ে তা পরীক্ষা করে দেখেন নারী শিক্ষকরা।
একজন ছাত্রী বিবিসি’কে জানান,ঋতুস্রাব চলছে এমন মেয়েদের চিহ্নিত করতে একটি নিবন্ধন খাতা রেখেছে হোস্টেল কর্তৃপক্ষ। যাদের মাসিক চলছে,তাদের ওই খাতায় নাম লিখতে হয়।
তবে গত দুই মাস খাতাটিতে কোনো নাম নিবন্ধন হয়নি।ঋতুমতী মেয়েদের শনাক্ত করে যে কড়াকড়ি আরোপ করা হয় সেসব থেকে বাঁচতেই যে তারা নাম লেখাতে চাননি সেটি পরিষ্কার। এ অবস্থাতেই হোস্টেল কর্মকর্তা অধ্যক্ষের কাছে মেয়েদের নিয়ম ভঙ্গের ওই অভিযোগ করেন।
ছাত্রীদের অভিযোগ,এরপরই হোস্টেলে কর্তৃপক্ষ এবং অধ্যক্ষের হেনস্তার শিকার হয়েছেন তারা। ঘটনাটিকে তারা খুবই ‘বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা’ বলে বর্ণনা করেছেন।এটি তাদেরকে ‘আতঙ্কগ্রস্ত’ করে তুলেছে এবং তা মানসিক নির্যাতনের সামিল বলেও ছাত্রীরা অভিযোগ করেছেন।
একজন ছাত্রীর বাবা বলেন, তিনি যখন হোস্টেলে যান তখন তার মেয়েসহ কয়েকজন ছাত্রী তার কাছে এসে কাঁদতে কাঁদতে বলেন,‘ওরা কষ্টে আছে’।
ঘটনার এক দিন পর গত বৃহস্পতিবার কিছু ছাত্রী ক্যাম্পাসে বিক্ষোভও করেছে। তাদের হয়রানি করার অভিযোগে কলেজ কর্তৃপক্ষের শাস্তি দাবি করে তারা।
কলেজের ট্রাস্টি প্রবীণ পিন্দোরিয়া ঘটনাটিকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দিয়ে বলেন,ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাউকে দোষী পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।