দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা

ভারতে রাজধানী দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে শনিবার। এ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Feb 2020, 05:14 PM
Updated : 7 Feb 2020, 05:28 PM

রাজধানীর ক্ষমতায় কে থাকবে তা নিয়েও চলছে শেষমুহূর্তের কৌশলী প্রচেষ্টা। এর মধ্যেই নিরাপত্তার বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা রাজধানীকে। কোনওরকম যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য সতর্ক রয়েছে নির্বাচন কমিশন ও দিল্লি পুলিশ।

ভোটকেন্দ্রগুলোতেও চলছে শেষমুহুর্তের প্রস্তুতি। ৮ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকেই ভোটের লাইনে দাঁড়াবেন দিল্লিবাসী।১১ ফেব্রুয়ারি ফল ঘোষণা করা হবে। এ নির্বাচনে ক্ষমতায় এলে নতুন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) দিল্লি তে কিছুতেই চালু হতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে কংগ্রেস পার্টি। প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টেও যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা।

নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশজুড়ে আন্দোলনের কারণে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবারের নির্বাচনে অগ্নিপরীক্ষার মুখে আছে। সিএএ নিয়ে বিরোধীদের চালানো প্রচারকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে তাই মরিয়া হয়ে কাজ করেছে বিজেপি।

সিএএ’-র সমর্থনে জনমত তুলে ধরায় বিজেপি এবার গোড়া থেকেই সচেষ্ট ছিল। শেষ দিনে পশ্চিমবঙ্গে সিএএ’র প্রচারে বিজেপির মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমারের সাক্ষী হয়েছে টালিগঞ্জ। গ্রেফতার হয়েছেন বিজেপি’র অনেক নেতাই।

ওদিকে, দিল্লি ভোটের আগের দিন ফের বন্দুকধারীর নিশানা হয়েছে সিএএ বিরোধী বিক্ষোভস্থল। শুক্রবার জাফরাবাদের সিএএ বিরোধী বিক্ষোভস্থলে মোটর বাইকে এসে গুলি চালায় দুই আততায়ী। এ ঘটনায় কারও প্রাণহানি না হলেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। সিএএ বিরোধিতায় আঘাত হানতেই এই গুলি চালানোর ঘটনা বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে দিল্লি পুলিশ।

অন্যদিকে, বিধানসভা নির্বাচনে যাতে কোনও রকম প্রভাব না পড়ে, সেকারণে দিল্লির শাহীনবাগ থেকে প্রতিবাদীদের সরানোর জন্য আবেদনের শুনানি পিছিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। দিল্লির প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ নন্দ কিশোর চলতি সপ্তাহের শুরুতে প্রতিবাদীদের সরানোর আবেদন করেছিলেন। দিল্লিতে ভোটের পর আগামী সোমবার এ মামলার শুনানি হবে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ভোটের আগের রাতে ট্যুইটারে 'হিন্দু-মুসলিম' ভিডিও পোস্ট করে নির্বাচন কমিশনের রোষের মুখে পড়েছেন। ভোটবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে শুক্রবার কেজরিওয়ালকে কমিশন কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠিয়েছে। এ ধরনের ভিডিয়োর ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত হতে পারে বলে নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে। শনিবার বিকেল ৫টার মধ্যে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে নোটিসের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

দ্য টাইমস নাও-ইপসোস এর সর্বাসাম্প্রতিক জনমত জরিপে এবারের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে দ্বিমুখী লড়াইয়ের ইঙ্গিত মিলেছে। লড়াই হবে মূলত আম আদমি পার্টি (আপ) এবং ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মধ্যে। রাজধানীর বর্তমান শাসকদল আপকে সমর্থন জানিয়েছেন ৫২ শতাংশ ভোটার। অন্যদিকে, বিজেপির পক্ষে ভোট পড়েছে ৩৪ শতাংশ। সেক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছে কংগ্রেস।

জরিপের এ আভাস নির্ভুল হলে এ বার ৫৪ থেকে ৬০টি আসন অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল (আপ) পেতে পারে। অন্যদিকে, বিজেপি যেতে পারে ১০ থেকে ১৪টি আসন।

দিল্লি বিধানসভার মোট আসন সংখ্যা ৭০। ২০১৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৬৭ আসনেই আপ জিতেছিল। বাকি ৩টি আসন বিজেপি পেয়েছিল। গত বছর কেজরিওয়ালের দলের পক্ষে পড়েছিল ৫৪.৫ শতাংশ ভোট। আর মাত্র ৩২.৩০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি।