বুধবারে ধর্মঘটে ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ব্যাংকিং সেবা বিঘ্নিত হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, বামপন্থি দলগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ট্রেড ইউনিয়নের পাশাপাশি প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেসঘনিষ্ঠ ট্রেড ইউনিয়নও এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শ্রম সংস্কার নীতির বিরোধিতায় রাস্তায় নামে।
মোদী সরকারের প্রস্তাবিত সংস্কার নীতিতে রাষ্ট্রীয় বিমান পরিবাহী সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া ও তেল কোম্পানি বিপিসিএলকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার পাশাপাশি বেশকিছু সরকারি ব্যাংককে একীভূত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
শ্রমিকদের এ ধর্মঘটে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিবঙ্গের কলকাতায় ট্রেন যোগাযোগ ব্যাহত হয়েছে; বেশকিছু শহরের দোকানপাট ও ব্যাংক বন্ধ ছিল।
পশ্চিমবঙ্গ, কেরালাসহ একাধিক রাজ্যে বাস, টেক্সি ও অটোরিকশা চলাচল বন্ধ থাকলেও রাজধানী দিল্লি ও ব্যবসায়িক রাজধানী খ্যাত মুম্বাইয়ে ধর্মঘটের তেমন একটা প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
অল ইন্ডিয়া ব্যাংক এমপ্লয়িজ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সি এইচ ভেঙ্কটাচালাম বলেছেন, সরকার ১০টি ব্যাংককে একীভূত করে চারটিতে নামিয়ে আনার যে প্রস্তাব করেছে তাতে অনেকেই চাকরি হারাবেন।
ব্যাংকগুলো থেকে মন্দ ঋণ পুনরুদ্ধারের হার কমবে,এর ফলে সরকারের অন্তত ১৪ হাজার কোটি ডলার ক্ষতি হবে বলেও আশঙ্কা তার।
“মোদী সরকারের নীতি অর্থনীতিতে ভয়াবহ মন্দা নিয়ে এসেছে এবং ব্যাংকগুলোতে জন্য মন্দ ঋণের হার বাড়িয়েছে,” শ্রমিকদের বেতনভাতা বাড়ানোর মাধ্যমে পণ্য ক্রয়ে চাহিদা বৃদ্ধির মাধ্যমে সরকার পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে পারে বলেও পরামর্শ দিয়েছেন এ ট্রেড ইউনিয়ন নেতা।
বুধবারের ধর্মঘটে অংশ নিলে সরকার শ্রমিকদের বেতন কাটা এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ‘শাস্তিমূলক ব্যবস্থা’ নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিল।
এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির এ দেশটি গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ মন্দা পার করছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
বিদেশি বিনিয়োগে ঘাটতি এবং পণ্য ক্রয়ে চাহিদা কমতে থাকায় এ বছর দেশটির প্রবৃদ্ধির হার ৫ শতাংশের মতো হবে বলে মঙ্গলবার বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার জানিয়েছে; এ হার গত ১১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী টুইটারে মোদী সরকারের নীতির কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, সরকারের ভুল পদক্ষেপ ‘মারাত্মক বেকারত্ব’ সৃষ্টি ও রাষ্ট্র পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করেছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নির্মাণ ও উৎপাদন খাতের লাখো শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন; ঋণগ্রস্ত কোম্পানিগুলো তাদের বিনিয়োগ পরিকল্পনা কাটছাঁট করতে বাধ্য হচ্ছে।
দেশটিতে গত বছর ডিসেম্বরে বেকারত্বের হার বেড়ে ৭ দশমিক ৭ শতাংশে পৌঁছে যায় বলে মুম্বাইভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমির দেয়া তথ্যে দেখা গেছে। ২০১৯ এর শুরুতেও এ হার ছিল ৭ শতাংশ।