বিক্ষোভে উত্তাল দিল্লি, বহু জায়গায় বন্ধ ইন্টারনেট-বহাল কারফিউ

ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের(সিএএ) প্রতিবাদে ফুঁসতে থাকা আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, কেরালা, ম্যাঙ্গালুরু, উত্তরপ্রদেশের পাশাপাশি প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে রাজধানী দিল্লিও। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বিভিন্ন রাজ্যের বহু জায়গায় বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। বহাল রয়েছে কারফিউও।

>>রয়টার্স
Published : 20 Dec 2019, 12:14 PM
Updated : 20 Dec 2019, 12:35 PM

শুক্রবার দিল্লিতে পুলিশ মিছিলের কোনো অনুমতি না দিলেও এদিন  দুপুরে জুমার নামাজের পরই পুলিশি বাধার তোয়াক্কা না করে জামা মসজিদ থেকে মিছিল করে এগিয়েছে বিশাল জনস্রোত। মিছিলের নেতৃত্বে ছিল দলিতদের সংগঠন ভীম আর্মি। স্লোগান তুলে তারা রওনা দেয় যন্তরমন্তরের উদ্দেশে।

জামা মসজিদের বাইরে বেরনোর গেট বন্ধ করে পুলিশ প্রতিবাদীদের আটকানোর চেষ্টা করলেও বিশাল জনস্রোতের সামনে এ বাধা ভেঙে পড়ে। জামা মসজিদ থেকে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে মিছিল। এর কিছু পরেই ভীম আর্মি চিফ চন্দ্রশেখরকে আটক করে পুলিশ। তবে তাকে আটকে রাখা যায়নি। পুলিশ তাকে ভ্যানে তোলার আগেই তিনি হাত ছাড়িয়ে ফের মিছিলে সামিল হন।

উত্তরপূর্ব দিল্লির ১২টি পুলিশ স্টেশনের পুলিশ জামা মসজিদ-সহ বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন ছিল। নিরাপত্তা ও অশান্তি ঠেকাতে ওই এলাকাগুলোতে নজরদারির জনয ব্যবহার করা হয়েছে ড্রোন। এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাড়ির বাইরে নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতায় প্রতিবাদ জানান সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়ও। তাকে আটক করেছে পুলিশ।

বিক্ষোভের কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে দিল্লির সমস্ত মেট্রো স্টেশন। বন্ধ রয়েছে লাল কেল্লা ও জামা মসজিদ স্টেশন। লাল কেল্লা এলাকায় ১৪৪ ধারা থাকলেও তা অমান্য করে ভীম আরমি মিছিল করেছে। এতে উপস্থিত ছিল জহওরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় ও জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভের জেরে উত্তরপ্রদেশ এবং কর্ণাটকের একাধিক জায়গায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। আপাতত শুক্রবার রাত ১০টা পর্যন্ত সেখানে বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট। সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ- যার মধ্যে লখনউতে গ্রেপ্তার হয়েছে ২শ’ জন, ৩০ সম্ভলে এবং মৌ , বারাণসী, আলিগড় ও প্রয়াগরাজ থেকেও বেশ কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছে।

গোটা উত্তরপ্রদেশে ১৪৪ ধারা জারি হয়েছিল বৃহস্পতিবারই। তা এখনো বহাল রয়েছে। ওদিকে কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালুরুতেও ২২ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত কারফিউ জারি রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ শহরটিতে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ-সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭ জনে দাঁড়িয়েছে।

শহরজুড়ে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং এখন সেখানকার পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত বলে জানিয়েছেন পুলিশের মুখপাত্র গুরু কামাত।সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যাতে উত্তেজনা ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য ম্যাঙ্গালুরুতে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত সমস্ত স্কুল-কলেজও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

উত্তরপ্রদেশ, মেঙ্গালুরু ছাড়াও, ব্যাপক ধরপাকড় হচ্ছে চেন্নাইয়েও। বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় সেখানে ৬০০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিনেতা, সঙ্গীতশিল্পী এবং রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়ের হয়েছে।