রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ড

পাকিস্তানের সাবেক সামরিক শাসক পারভেজ মোশাররফকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি বিশেষ আদালত।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Dec 2019, 07:30 AM
Updated : 17 Dec 2019, 10:29 AM

২০০৭ সালের ৩ নভেম্বর অবৈধভাবে সংবিধান স্থগিত করে জরুরি অবস্থা জারি করায় রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে এই সাজা দেওয়া হয়েছে।  

পেশোয়ার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ওয়াকার আহমাদ শেঠ নেতৃত্বাধীন তিন বিচারকের বিশেষ আদালত মঙ্গলবার ছয় বছর ধরে ঝুলে থাকা এ মামলার রায় ঘোষণা করে।

পাকিস্তানের ইতিহাসে এই প্রথম বেসামরিক আদালতে দেশদ্রোহের অভিযোগে কোনো সাবেক সেনাপ্রধানের বিচারের রায় এল বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ডন।

১৯৯৯ সালে এক সেনা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখলের পর ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করা পারভেজ মোশাররফ এখন আছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সেখান থেকে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগকে তিনি ‘ভিত্তিহীন’ বলেছেন।

“আমি দশ বছর দেশের (প্রেসিডেন্টের) দায়িত্ব পালন করেছি। দেশের জন্য লড়াই করেছি। এই মামলায় আমার বক্তব্যও শোনা হয়নি, অথচ আমাকে দোষী বানানো হয়েছে।” 

ডন জানিয়েছে, এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ পাবেন পারভেজ মোশাররফ। সুপ্রিম কোর্ট এই রায় বহাল রাখলে তখন তার সামনে কেবল প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ থাকবে।”

১৯৯৯ সালে যাকে উৎখাত করে মোশাররফ রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিলেন, সেই মুসলিম লিগ নেতা নওয়াজ শরিফ ফের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে ২০১৩ সালে এই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়। 

বিশেষ আদালত ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ এ মামলায় মোশাররফকে অভিযুক্ত করে বিচার শুরু করে। কিন্তু পরে বিচারের কাজ ঝুলে যায়। ওই অবস্থায় ২০১৬ সালের মার্চে চিকিৎসার কথা বলে দেশ ছাড়েন পাকিস্তানের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট। 

ওই বছর ওয়াশিংটনে এক অনুষ্ঠানে সাবেক এই জেনারেলের দাবি করেন, পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা দেশটির পরিবেশের উপযোগী করে গড়ে ওঠেনি বলেই প্রায় সময় সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্র পরিচালনার সামনের সারিতে এসে ভূমিকা রাখতে হয়।

এ মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যায়িত করে মোশাররফ বলে আসছিলেন, ২০০৭ সালে সংবিধান স্থগিত ও জরুরি অবস্থা জারির যে নির্দেশ তিনি দিয়েছিলেন, তাতে সরকার ও মন্ত্রিসভার সায় ছিল।

তবে ওই যুক্তি খারিজ করে দিয়ে আদালত রায়ে বলেছে, সংবিধান স্থগিতের সেই পদক্ষেপকে ছিল অবৈধ ও রাষ্ট্রবিরোধী।