দিল্লিতে সংঘর্ষের পর ভারতজুড়ে শিক্ষার্থীদের রাতভর বিক্ষোভ

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলাকালে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পুলিশের চালানো দমনপীড়নের প্রতিবাদে ভারতজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Dec 2019, 06:12 AM
Updated : 16 Dec 2019, 06:41 AM

রোববার রাতে উত্তর প্রদেশের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা জামিয়া মিলিয়ার শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়েছে মিছিল বের করে। পুলিশ মিছিল বন্ধ করার চেষ্টা করলে তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

মধ্যরাতে হায়দ্রাবাদের মাওলানা আজাদ উর্দু বিশ্ববিদ্যালয় ও বেনারসের হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়েও বিক্ষোভ শুরু হয়।

দিল্লিতে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ডাকে শত শত শিক্ষার্থী নগরীর পুলিশ সদরদপ্তরের সামনে জড়ো হয়ে জামিয়া মিলিয়ায় আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তি দাবি করে শ্লোগান দেয়।

রোববার সন্ধ্যায় জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিবাদ মিছিল দিল্লির যন্তরমন্তরের দিকে যাওয়ার চেষ্টাকালে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় শিক্ষার্থী ও অন্যান্য প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রতিবাদকারীরা বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেয়।

পুলিশের লাঠি পেটা ও কাঁদুনে গ্যাস থেকে বাঁচতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আশ্রয় নিলে তাদের ধাওয়া করতে থাকা পুলিশও ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের লাঠি পেটা করে প্রায় ১০০ শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া জামিয়া মিলিয়া ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশ করার ঘটনায় ভারতজুড়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।প্রতিবাদে নামে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম প্রতিবাদ শুরু হয়। সংহতি মিছিলে নামা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী ও ১০ পুলিশ আহত হন। এ ঘটনার পর আলিগড় শহরে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়, কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে শীতকালীন ছুটি ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করে। 

আটক শিক্ষার্থীদের তাৎক্ষণিক মুক্তি দাবি করে প্রায় মধ্যরাতে প্রবল শীত উপেক্ষা করে নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েকশ শিক্ষার্থী ও প্রতিবাদকারী দিল্লি পুলিশের সদরদপ্তরের সামনে অবস্থান নেয়। এতে পুলিশ সদরদপ্তরের সামনের প্রধান সড়কটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে শঙ্কায় পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ও জলকামান নিয়ে প্রস্তুত হয়ে থাকে।  

প্রায় মধ্যরাতে হায়দ্রাবাদের মাওলানা আজাদ উর্দু বিশ্ববিদ্যালয়, বেনারসের হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, লক্ষ্ণৌর নাডোয়া কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ মিছিল শুরু করে।

এক পর্যায়ে দিল্লির স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৩টার দিকে (সোমবার) জামিয়া মিলিয়ার আটক সব শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এরপর পুলিশ সদরদপ্তরের সামনে প্রতিবাদরতরা অবস্থান ছেড়ে দেয়।