ব্রিটিশ বাহিনীতে গুর্খা সৈন্য, চুক্তির পর্যালোচনা চায় নেপাল

ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে নিজেদের নাগরিকদের যোগ দেওয়ার সুযোগ রেখে করা ৭২ বছরের পুরনো একটি সামরিক চুক্তি পর্যালোচনা করতে চায় নেপাল।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2019, 12:50 PM
Updated : 14 Dec 2019, 02:44 PM

দুই শতাব্দির মধ্যে প্রথমবারের মতো ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর একটি গুর্খা বিগ্রেডে নেপালি নারীদের নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। 

এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগেই নেপাল চুক্তিটি পর্যালোচনা করতে চায় বলে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন।

গুর্খারা হিমালয় পর্বতের পাদদেশে বসবাসকারী একটি নেপালি সম্প্রদায়।যুদ্ধে জানবাজি রেখে লড়াইয়ের জন্য সম্প্রদায়টির খ্যাতি আছে। ব্রিটেন ১৮১৫ সাল থেকে নিজেদের সেনাবাহিনীতে গুর্খাদের অন্তর্ভুক্ত করে আসছে।

ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা পাওয়ার পর কাঠমান্ডু ও নয়াদিল্লির সঙ্গে লন্ডনের একটি সমঝোতা চুক্তি হয়। ওই চুক্তি ভারত ও ব্রিটেনকে নিজেদের বাহিনীতে গুর্খাদের সৈন্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার অনুমতি দেয়। 

২০০৭ সালে ব্রিটেন তাদের অভিজাত বাহিনীতে গুর্খা নারীদের সৈন্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নিয়োগ ও নির্বাচনের মানদণ্ডের মতো বিষয়গুলি নিষ্পত্তি করা দরকার বলে জানায়।

ব্রিটেন কতোজন গুর্খা নারীকে তাদের বাহিনীতে নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে তা পরিষ্কার নয়। কিন্তু ব্রিটিশ গণমাধ্যমের ভাষ্যমতে, ২০২০ সালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে প্রথম গুর্খা নারীদের প্রশিক্ষণ শুরু হতে পারে।

এখন নেপাল ৭২ বছরের পুরনো ত্রিপাক্ষিক ওই চুক্তিটি নবায়ন করতে চায় বলে শুক্রবার রাতে রয়টার্সকে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ কুমার গেওয়ালি।ওই চুক্তিটিতে বিদেশি সেনাবাহিনীগুলোতে গুর্খাদের নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে কাঠমাণ্ডুকে কোনো ভূমিকা রাখার সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, “ওই সমঝোতার কিছু শর্ত এখন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। তাই ব্রিটেনকে আমরা জানিয়েছি, চুক্তিটি পর্যালোচনা করে এটিকে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে পরিণত করতে চাই আমরা।

“এই (নিয়োগ) প্রক্রিয়ায় নেপাল সরকারের উপস্থিতি নির্ধারণ করা দরকার।”

নতুন চুক্তিতে পেনসন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে গুর্খাদের ক্ষোভেরও সমাধান করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।ব্রিটিশ সেনাবাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত গুর্খারা ব্রিটিশদের সমান পেনসন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পায় না, এমন অভিযোগ করেছে বলে গেওয়ালি জানিয়েছেন।

নেপাল বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র ১০টি দেশের অন্যতম।দেশটির জিডিপির এক চতুর্থাংশেরও বেশি গুর্খাসহ প্রবাসী নেপালিদের রেমিটেন্স থেকে আসে।

বর্তমানে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর গুর্খা ব্রিগেডে প্রায় তিন হাজার নেপালি সেনা আছে। তারা ইরাক, আফগানিস্তান ও বলকান অঞ্চলে যুদ্ধ করেছে।