ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইন বৈষম্যমূলক: জাতিসংঘ

ভারতে পাস হওয়ায় নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইনকে মুসলমানদের জন্য ‘বৈষম্যমূলক’ হিসেবে বর্ণনা করে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Dec 2019, 04:33 PM
Updated : 13 Dec 2019, 04:49 PM

ওই আইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয় মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের  জেনিভায় এক ব্রিফিংয়ে বলেন, “ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইনটি মৌলিক চরিত্রের দিক দিয়েই বৈষম্যমূলক এবং এ বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।”

“আমরা জানি যে এই আইনের বৈধতা ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে এবং আমাদের আশা মানবাধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইনে ভারতের যে দায়বদ্ধতা রয়েছে আদালত তা বিবেচনায় নিয়ে নাগরিকত্ব আইনটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে,” যোগ করেন তিনি।

১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের প্রস্তাব গত ১০ ডিসেম্বর ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় পাস হয়। পরে তা উচ্চকক্ষ রাজ্যসভাতেও পাস হয় এবং বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে তা আইনে পরিণত হয়।

বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে গিয়ে ভারতে শরণার্থী হওয়া হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সি সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা রয়েছে এই আইনে।

১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে বলা ছিল, অন্তত ১১ বছর ভারতে থাকলে তবেই কোনো ব্যক্তিকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। সংশোধনে ওই সময় কমিয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে। তবে তাতে বাইরে থেকে আসা মুসলিমদের কথা বলা হয়নি।

ওই আইনের প্রতিবাদে গত দুদিন ধরে সহিংস বিক্ষোভ চলছে ভারতের বিভিন্ন অংশে। বৃহস্পতিবার গুয়াহাটিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন দুইজন। শুক্রবার সংঘাত ছড়িয়েছে রাজধানী দিল্লিতেও।

নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার বলছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিম সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়াই আইন সংশোধনের উদ্দেশ্য। ওই তিন দেশে মুসলমানরা সংখ্যালঘিষ্ঠ নয়, ফলে তাদের ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হতে হয় না।

জেরেমি লরেন্স বলেন, ওই আইনে ছয়টি ধর্মের মানুষের মত মুসলমান শরণার্থীদের জন্য একই রকম সুরক্ষার কথা বলা হয়নি। আর এর মধ্য দিয়ে সংবিধানে বর্ণিত সবার জন্য সমতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি।

“আমরা জানি, এই আইনের বৈধতা ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে পর্যালোচনা হবে। আমরা আশা করি, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রতি ভারতের যে দায়বদ্ধতা রয়েছে, আদালত তা সতর্কতার সাথে বিবেচনা করবে।”