অযোধ্যা মামলার রায় মেনে শান্ত থাকার আহ্বান সব পক্ষের

প্রায় ১৩৪ বছরের দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের অবসান ঘটিয়ে বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি নিয়ে হওয়া মামলার রায় ঘোষণার পর শান্তি বজায় রাখার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সব পক্ষ ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Nov 2019, 01:16 PM
Updated : 12 Nov 2019, 04:43 AM

শনিবার দেওয়া এই রায় নিয়ে উত্তর প্রদেশের সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড এবং মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড অসন্তোষ প্রকাশ করলেও রায়ের বিরুদ্ধে পাল্টা কোনো আবেদন জানানো হবে না বলে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে।

রায় মেনে নিয়ে শান্তি বজায় রাখার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে তারা।

ওয়াকফ বোর্ডের আইনজীবী জাফরিয়াব জিলানি বলেছেন, “আমরা এই রায় মেনে নিলেও পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই। আমরা রায়কে সম্মান করি এবং জনগণের প্রতি শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ করছি। এখানে জয়-পরাজয়ের কিছু নেই।”

ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, তিনি প্রতিবাদ-প্রতিরোধের রাস্তায় কাউকে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তাদেরও কোনো প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করার পরিকল্পনা নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন।

দিল্লি জামা মসজিদের শাহি ইমাম সৈয়দ আহমেদ বুখারি এই বিতর্ক আর বাড়তে দেওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ভারতের মুসলিমরা শান্তি চায় এবং তারা সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রায় মেনে নিবে বলে ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে।

অযোধ্যার জামা মসজিদের শাহি ইমামও সর্বোচ্চ আদালতের এ রায়কে চ্যালেঞ্জ করার বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন। এই রায় মেনে নেওয়া উচিত বলে মত তার। 

আজমির শরীফের দরগার দেওয়ান সৈয়দ জয়নুল আবেদিনও রায় মেনে নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “এই রায়ে কারও জয়-পরাজয় হয়নি। দেশের স্বার্থে বিতর্কে ইতি টানা উচিত।”

অপরদিকে রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ বর্ণনা করে হিন্দু মহাসভার আইনজীবী বরুণ কুমার সিংহ এই রায়ের মাধ্যমে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের বার্তা দিয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন।

রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত জানিয়েছেন, এখন রামমন্দির নির্মাণই তাদের প্রধান লক্ষ হবে। অযোধ্যায় পৃথক ভূমিতে মসজিদ নির্মাণের ইস্যুতে সরাসরি কোনো মন্তব্য না করে দেশবাসীর প্রতি শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

এই রায়কে ‘কারও জয় বা পরাজয় হিসেবে দেখা উচিত হবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন।

রায়ের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতারা শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। 

রায় ঘোষণার পর এক টুইটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, “অযোধ্যা নিয়ে রায় দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। রায়কে কারও জয় বা কারও পরাজয় হিসাবে বিবেচনা করা উচিত নয়। রামভক্ত হোক বা রহিমভক্ত, এখন আমাদের সবার উচিত ভারত ভক্তির চেতনাকে শক্তিশালী করা। দেশবাসীর কাছে শান্তি, সম্প্রীতি ও ঐক্য বজায় রাখার আবেদন জানাচ্ছি।”  

রায় ঘোষণার পর এক টুইটে ‘পারস্পরিক সম্প্রীতি’ বজায় রাখার আহ্বান জানান কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী। সময়টিকে ‘ভ্রাতৃত্ব, বিশ্বাস ও ভালোবাসার’ সময়ে পরিণত করার জন্য ভারতের জনগণের প্রতি আবেদন জানান তিনি।  

অযোধ্যার ভূমি বিতর্কের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিযুক্ত শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর দীর্ঘ সময় ধরে চলা মামলা শেষ হওয়ার সন্তোষ প্রকাশ করে ‘সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি’ বজায় রাখার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।