নাড়া পোড়াতে আগুন, ‘অস্বাস্থ্যকর মাত্রায়’ দিল্লির বাতাস

যানবাহন ও কারখানার ধোঁয়ার পাশাপাশি আশপাশের ধান ক্ষেতগুলোতে ফসলের নাড়া পোড়াতে কৃষকের দেয়া আগুনে সৃষ্ট ধোঁয়ায় ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লির বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর মাত্রায়’ পৌঁছেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Oct 2019, 11:54 AM
Updated : 23 Oct 2019, 04:13 PM

চলতি সপ্তাহে দিল্লির বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে ২.৫ মাইক্রোমিটার ব্যাসের বস্তুকণার পরিমাণ (পিপিএম) ২০০ তে পৌঁছেছে বলে কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এটি বাতাসে উপাদানটির গ্রহণযোগ্য মাত্রার দ্বিগুণ। শীতকালে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রতি ঘনমিটারে ২.৫ মাইক্রোমিটার ব্যাসের বস্তুকণার পরিমাণ (পিপিএম) যদি শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকে, তাহলে ওই বাতাসকে বায়ু মানের সূচকে (একিউআই) ‘ভালো’ বলা যায়।

এই মাত্রা ৫১-১০০ হলে বাতাসকে ‘মধ্যম’ মানের এবং ১০১-১৫০ হলে ‘বিপদসীমায়’ আছে বলে ধরে নেওয়া হয়।

আর পিপিএম ১৫১-২০০ হলে বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১-৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-৫০০ হলে ‘অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়।

সাধারণত বছরের এই সময়ে দিল্লির আশপাশের রাজ্যের কৃষক বীজ বপনের আগে খড়কুটো পুড়িয়ে ক্ষেত প্রস্তুত করে। এর সঙ্গে যানবাহন ও শিল্প-কারখানার ধোঁয়া ভারতের রাজধানীকে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরে পরিণত করে।

“চলতি বছর পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার পথে,” বলেছেন রাজধানী পরিচ্ছন্ন রাখতে কেন্দ্রীয় সরকারের বানানো একটি কমিটির পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ভিমলেন্দু ঝা। 

নাড়া পোড়ানো বন্ধে সরকার ১৬ কোটি ডলারের একটি ভর্তুকি প্রকল্প নিয়েও সফল হতে পারেনি।

ওই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের ‘হ্যাপি সিডার মেশিন’ দেওয়া হয়েছিল, যাতে জমিতে আগুন না দিয়েই নাড়া সরিয়ে বীজ বপন করা যেত।

দিল্লি সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোর ৮০ শতাংশ কৃষি জমি ওই প্রকল্পের আওতায় ছিল, যদিও শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়নের সীমাবদ্ধতা ও কৃষকদের অনীহায় বায়ূ দূষণ কমানোর এ পরিকল্পনাটিও অনেকটাই ভেস্তে গেছে।

রয়টার্স এ নিয়ে রাজধানীর সীমান্তবর্তী পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের ৫০ কৃষকের সঙ্গে কথা বলে এর মধ্যে মাত্র ২০ শতাংশ সরকারের দেয়া ‘হ্যাপি সিডার মেশিন’ ব্যবহার করছে বলে জানতে পেরেছে।

মেশিনটি ব্যবহার না করার দায় কৃষকদেরই দিচ্ছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। কেবল ভর্তুকির মাধ্যমেই এটি করা যাবে না বলেও ধারণা তাদের।

“এটা তাদের (কৃষক) মানসিকতা, তাদের এ ধরনের চিন্তাভাবনা অবশ্যই বদলাতে হবে,” বলেছেন কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা অশ্বিনী কুমার।

ভারতের প্রধান পরিবেশ আদালত ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল ফসলের উচ্ছিষ্ট পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা দিলেও কদাচিৎ এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে জোর করা হয়।

নয় বছরের মধ্যে গত মাসেই দিল্লির বাতাস ছিল সবচেয়ে ভালো; এসময় ২.৫ মাইক্রোমিটার ব্যাসের ভাসমান বস্তুকণার পরিমাণ প্রতি ঘনমিটারে ছিল মাত্র ৪০।