পাকিস্তানের সঙ্গে ৩.৫ কোটি পাউন্ডের মামলা জিতল নিজামের পরিবার

পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর যুক্তরাজ্যের আদালতে সাড়ে তিন কোটি পাউন্ডের অধিকার ফিরে পেল হায়দরাবাদের শেষ নিজামের পরিবার।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Oct 2019, 07:10 AM
Updated : 3 Oct 2019, 07:10 AM

লন্ডনের রয়্যাল কোর্টস অফ জাস্টিস বুধবার এক রায়ে বলেছে, যুক্তরাজ্যে ব্যাংকে সংরক্ষিত ওই অর্থের ওপর পাকিস্তানের কোনো অধিকার নেই, এর মালিকানা নিজাম ওসমান আলি খানের বংশধরদের।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশভাগের ঠিক পরপর, ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের ন্যাশনাল ওয়েস্টমিনস্টার ব্যাংকে পাকিস্তানের তখনকার হাই কমিশনারের অ্যাকাউন্টে ১০ লাখ পাউন্ড জমা দেন হায়দরাবাদের সপ্তম নিজাম ওসমান আলি খান, যা নিয়ে এই বিরোধের সূচনা। সেই টাকাই এখন সুদে আসলে বেড়ে সাড়ে তিন কোটি পাউন্ড হয়েছে।  

ব্রিটিশ আমলে হায়দরাবাদ ছিল একটি করদ রাজ্য। নিজাম ওসমান আলি খান সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না, তিনি কোন পক্ষে যাবেন- ভারত, না পাকিস্তান। 

১৯৪৮ সালে এক সামরিক অভিযানে হায়দরাবাদ ভারতের অংশে পরিণত হয়। তার ঠিক আগে আগে লন্ডনের ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নিজামের টাকা জমা পড়ে।  

নিজামের বংশধরদের দাবি, হায়দরাবাদ ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর ওসমান আলি খান ওই টাকা ফেরত চেয়েছিলেন। কিন্তু পাকিস্তান তা ফিরিয়ে দিতে অস্বীকার করে। 

ন্যাশনাল ওয়েস্টমিনস্টার ব্যাংকও আদালতের মাধ্যমে এ বিবাদের সুরাহা হওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো পক্ষকে ওই অর্থ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

যুক্তরাজ্যের আদালতে এ মামলায় নিজামের দুই উত্তরসূরি মুকররম জাহ ও মুফাখম জাহর সঙ্গে ভারত সরকারও পক্ষভুক্ত হয়।

মামলার শুনানিতে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়, নিজামের পক্ষ থেকে ওই টাকা তাদের দেওয়া হয়েছিল অস্ত্র কেনার জন্য।

কিন্তু আদালতের রায়ে বলা হয়, ওই টাকা জমা পড়েছিল যুক্তরাজ্যে একটি ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টে। এটা প্রমাণ করে না যে ওই টাকা পাকিস্তানকে দেওয়া হয়েছিল। বরং যেসব তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে, তাতে এটা স্পষ্ট যে ওই টাকার মালিক ছিলেন নিজাম এবং তা পাকিস্তানের হাই কমিশনারের অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়েছিল সম্পত্তির সুরক্ষার জন্য ‘ট্রাস্টি’ হিসেবে।

মুকররম জাহর আইনজীবী পল হিউয়িট বিবিসিকে বরেন, এই মামলা যখন শুরু হয়েছিল, তখন তার মক্কেল ছিলেন শিশু। আর রায় যখন হল, তার বয়স তখন আশি পেরিয়ে গেছে।

পাকিস্তান সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ পাবে। আর তা না হলে ওই অ্যাকাউন্টের টাকা নিজামের পরিবারকে ফিরিয়ে দিতে হবে।