প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিলো আফগানিস্তান

কড়া নিরাপত্তার মধ্যে তুলনামূলক শান্তিপূর্ণভাবে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে।

নিউজডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2019, 07:39 AM
Updated : 28 Sept 2019, 04:14 PM

শনিবার ভোট চলাকালে কয়েকটি ছোটখাটো হামলা, কেন্দ্রে কম ভোটারের উপস্থিতি ও ভোট দেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে অসন্তোষ উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রাথমিক ফলাফল পাওয়ার জন্য ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য ৭ নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কোনো প্রার্থী ৫১ শতাংশ ভোট না পেলে এগিয়ে থাকা দুই প্রার্থীকে নিয়ে দ্বিতীয় দফা ভোট অনুষ্ঠিত হবে। তাদের মধ্য থেকে একজন আফগানিস্তানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হবেন।

ভোট বানচাল করার জন্য তালেবান জঙ্গিরা দেশজুড়ে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে  হামলা চালিয়েছে, কিন্তু কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে তাদের উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি।

ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর এ নির্বাচনকে অতীতের যে কোনো নির্বাচন থেকে ‘সুষ্ঠু ও সুন্দর’ বলে বর্ণনা করেছেন দেশটির স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (আইইসি) প্রধান হাওয়া আলম নুরিস্তানি। 

দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তালেবানের ছোটখাট কয়েকটি হামলায় দুই পুলিশ সদস্য ও এক বেসামরিক নিহত হয়েছেন এবং ৩৭ জন আহত হয়েছেন।

ভোটার ও ভোট কেন্দ্রগুলোর সুরক্ষার জন্য দেশজুড়ে প্রায় লাখখানেক সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছিল। 

ভোট পড়ার হারের বিষয়ে আইইসি কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিভাবে বিস্তারিত কিছু জানাননি, কিন্তু কাবুল অবস্থানকারী পশ্চিমা কূটনীতিকরা ভোটের হার অত্যন্ত কম ছিল বলে জানিয়েছেন। সহিংসতার শঙ্কা ও ভোট কর্মকর্তাদের দেরির কারণে ভোট পড়ার হার কম হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।

পুরো দেশজুড়েই কারিগরি সমস্যার কারণে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হতে দেরি হয়, এ কারণে পরে ভোটের সময় দুই ঘণ্টা বাড়ানো হয়।

ভোট গ্রহণের ধীর গতির কারণে কিছু কেন্দ্রে ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দেয় বলে জানিয়েছেন স্বাধীন পর্যবেক্ষরা। এ সময় লাইনে ভোটারদের ভিড় জমে যায়।  

কাবুলে পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্বপালন করা নিশঙ্ক মোতওয়ানি বলেন, “প্রথম ভোটারের ভোট দিতে ৩১ মিনিট লেগে যায়। পরের ভোটারের লাগে পাঁচ মিনিট, এরপর থেকে সাড়ে তিন মিনিটের মধ্যে ভোট দেওয়ার ধারা তৈরি হয়।”

লাইন না এগোনোয় ভোটাররা উত্তেজিত হয়ে উঠছিলেন আর তাতে নির্বাচন কমিশনের কর্মীরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি। 

ভোটের লড়াইয়ে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি এবং প্রধান নির্বাহী আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ। এই দুইজনই ২০১৪ সাল থেকে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে দেশ পরিচালনা করছেন।

প্রায় দেড় যুগ ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে দেশে শান্তি ফেরানোর পথরেখা তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে গত দুই বছর ধরে আফগান তালেবানের সঙ্গে আলোচনা চলছিল।

ওই আলোচনায় একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার আশায় দেশটিতে দুই দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনও পেছানো হয়। কিন্তু এ মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটের তারিখ ঘোষণা করে আফগান সরকার।

একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার খুব কাছে পৌঁছে গিয়েও শেষ পর্যন্ত আলোচনা ভেস্তে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ তালেবান নেতারা ভোট বানচাল করতে ভোটকেন্দ্রে হামলা চালানোর হুমকি দিয়ে রেখেছিল।