শান্তিরক্ষা মিশনে শ্রীলঙ্কার সৈন্যদের নিযুক্তি স্থগিত

গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের মুখে থাকা এক সামরিক কর্মকর্তাকে সেনাবাহিনীর প্রধান করার প্রতিক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা মিশনে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীর মোতায়েন স্থগিত করেছে জাতিসংঘ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Sept 2019, 06:25 AM
Updated : 26 Sept 2019, 06:27 AM

বুধবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের মুখপাত্র ফারহান হক বিষয়টি জানিয়েছেন বলে খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

এক ঘোষণায় হক বলেন, “আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবাধিকার আইনের গুরুতর লঙ্ঘনের বিস্তারিত তথ্যপ্রমাণ ও বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ থাকা সত্বেও লেফটেন্যান্ট জেনারেল শাভেন্দ্র সিলভাকে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীর কমান্ডার পদে নিযুক্ত করায় শ্রীলঙ্কা সরকারের কাছে উদ্বেগ জানিয়েছিলাম আমরা।

“এই নিযুক্তির আলোকে জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিস অপারেশন্স ভবিষ্যতের জন্য শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীর মোতায়েন স্থগিত করছে, তবে যেখানে এ স্থগিতের কারণে জাতিসংঘ অভিযানগুলো গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে তা এর বাইরে থাকবে।”

অগাস্টে যুদ্ধ অভিজ্ঞ লে. জেনারেল শাভেন্দ্র সিলভাকে সেনাবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত করেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। তখন সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে শাভেন্দ্রর নিযুক্তির কড়া সমালোচনা করেছিল জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র।

শ্রীলঙ্কায় ২৬ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে বিদ্রোহী তামিল টাইগারদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর একটি ডিভিশনকে সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বর্তমানে ৫৫ বছর বয়সী সামরিক কর্মকর্তা শাভেন্দ্র। কিন্তু ওই যুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে কয়েক হাজার বেসামরিককে হত্যা করায় যুদ্ধে তার জয় নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়।

সরকার কিছু এলাকাকে ‘নো ফায়ার জোন’ হিসেবে ঘোষণা করলেও সেনাবাহিনী সেখানেও গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছিল, ওই এলাকার হাসপাতালগুলো বাদ পড়েনি।  

২০০৯ সালে শেষ হওয়া ওই যুদ্ধের চূড়ান্ত সপ্তাহে বিচার বহির্ভূতভাবে নিরস্ত্র বিদ্রোহীদের হত্যা ও সেনা হেফজতে লোকজনের ওপর পদ্ধতিগতভাবে নির্যাতন চালানোর জন্য শাভেন্দ্রর নেতৃত্বাধীন ডিভিশনকে অভিযুক্ত করেছে জাতিসংঘের একটি প্যানেল।

শাভেন্দ্র ১৯৮৪ সালে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি বাহিনীটির চিফ অফ স্টাফ ‍নিযুক্ত হয়েছিলেন। তিনি তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এসব সমালোচনার বিষয়ে মন্তব্যের জন্য শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট দপ্তর ও সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম ইউনিটের কাছে অনুরোধ পাঠানো হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।