‘হাউডি মোদী’ ঘিরে উত্তেজনা হিউস্টনে, স্টেডিয়ামে জনারণ্য

যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনে শুরু হয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিনীদের আয়োজিত জনসভা ‘হাউডি মোদী’। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকেও।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2019, 03:35 PM
Updated : 22 Sept 2019, 06:31 PM

একমঞ্চে পাশাপাশি উপস্থিত হয়েছেন দুই রাষ্ট্রনেতা। একই মঞ্চে ভাষণ দিচ্ছেন তারা। এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে তাই উত্তেজনা তুঙ্গে। টেক্সাসের এনআরজি স্টেডিয়াম এরই মধ্যে পরিণত হয়েছে জনারণ্যে। এ স্টেডিয়ামেই আয়োজন করা হয়েছে সভাটি। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলবে অনুষ্ঠান।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে এ অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, সাত দিনের সফরে শনিবার যুক্তরাষ্ট্র পৌঁছেছেন মোদী। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি সীমিত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারেন তিনি। চুক্তি নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় বসার আগেই রোববার এ জনসভায় হাজির হয়েছেন মোদী।

‘হাউডি মোদী’ শীর্ষক এ সভায় ৫০ হাজারেরও বেশি ভারতীয় মার্কিনি উপস্থিত থাকছেন। ইংরাজিতে ‘হাও ডু ইউ ডু’ কথাটিকেই সংক্ষেপে বলা হচ্ছে ‘হাউডি’।

এ জনসভায় মোদীর লক্ষ্য হচ্ছে, জাতিসংঘ অধিবেশনের আগে কাশ্মীর প্রসঙ্গে সরকারের বক্তব্য জোরালভাবে পেশ করে ঘর গুছিয়ে নেওয়া। আর ট্রাম্পের লক্ষ্য হচ্ছে, আগামী বছরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ভারতীয়-বংশোদ্ভূত মার্কিন ভোটারদের ইতিবাচক বার্তা দেওয়া।

ট্রাম্প কিছুক্ষণের জন্য অনুষ্ঠানে থাকবেন বলে এর আগে শোনা গেলেও পরে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, তিনি প্রায় দেড় ঘন্টা থাকছেন। অনুষ্ঠানের বক্তব্যে এরই মধ্যে মার্কিন অর্থনীতিতে অবদানের জন্য প্রবাসী ভারতীয়দের প্রশাংসা করেছেন ট্রাম্প। সবসময় সবকিছুতে মোদীর পাশে থাকারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

ওদিকে, নরেন্দ্র মোদীও প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন ট্রাম্পের। ভারতের বন্ধু হিসাবে ট্রাম্পের পরিচয় তুলে ধরেন মোদী। ওদিকে মোদীকেও যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু বলে উল্লেখ করেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের জনগণের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্ককে গুরুত্ব দেওয়াসহ দুদেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব ঝালিয়ে নেওয়া এবং বাণিজ্য-বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে দু’দেশের সম্পর্ক আরো মজবুত করার পন্থা খোঁজার সুবর্ণ সুযোগ হিসাবে দেখা হচ্ছে ‘হাউডি মোদী’ জনসভাকে।

তাছাড়া, জাতিসংঘ অধিবেশনের ফাঁকে বিভিন্ন দেশের নেতাদের মধ্যে পারস্পরিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা সফল হলে কিছু চুক্তিও স্বাক্ষর হতে পারে।

চীন-জাপানসহ বিশ্বের শক্তিশালী অর্থনীতির দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান বিভিন্ন বাণিজ্য চুক্তির কারণে আমেরিকানরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন দাবি করে দেশগুলোর সঙ্গে ‘নিজেদের স্বার্থ বজায় রেখে’ নতুন বাণিজ্য চুক্তি চান ট্রাম্প।

ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়েও ট্রাম্প সন্তুষ্ট নন। তিনি বার বার মার্কিন পণ্যের উপর ভারতের উচ্চ শুল্ক হার নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন, বিশেষ করে হার্লি-ডেভিডসন মোটরসাইকেলের উপর ৫০ শতাংশ শুল্কারোপ নিয়ে।

যুক্তরাষ্ট্র তাদের জেনারালাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস (জেএসপি) প্রকল্পের অংশ হিসেবে গত জুনে ভারতের পাঁচশ ৭০ কোটি মার্কিন ডলারের রপ্তানি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশ সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছে। জবাবে, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের ২৮টি পণ্যের উপর উচ্চ শুল্ক ধার্য করে। যার মধ্যে কাঠ বাদাম, আপেল এবং আখরোটও রয়েছে।

ভারতের কাছে যুক্তরাষ্ট্র তাদের কৃষিজাত পণ্যের উপর উচ্চ শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছে। নিউ ইয়র্কে দুই নেতার বৈঠকে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানান ওয়াশিংটন ও দিল্লি ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তারা।