গত ৫ অগাস্ট ভারত সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকেই স্থানীয় কয়েকশ’ রাজনীতিবিদের মতো ফারুককেও গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল।
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ফারুকের এই বন্দিদশাকে ‘অবৈধ’ দাবি করে করা একটি পিটিশন আমলে নিয়ে সোমবার কেন্দ্র সরকার এবং জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসনকে নোটিস পাঠিয়ে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন ধার্য করার কথা জানায়। তারপরই ফারুককে জননিরাপত্তা আইনে আটক করা হল।
ভারতে লোকসভার বর্তমান এমপি এবং ৮৩ বছরের এই রাজনীতিবিদকে সোমবার ‘সরকারি নির্দেশ বিঘ্নিত’ করার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ অভিযোগেই তাকে তিনমাস আটকে রাখার হবে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
চার দশক ধরে ফারুকের ঘনিষ্ঠ মিত্র তামিল নাড়ুর দল এমডিএমকে’র নেতা ভাইকো সুপ্রিম কোর্টে ওই পিটিশন দায়ের করেন। পিটিশনে ফারুককে চেন্নাইয়ে এমডিএমকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার অনুমতি দিতে অনুরোধ করা হয়।
জননিরাপত্তা আইন বা পাবলিক সেফটি অ্যাক্ট (পিএসএ) এর আওতায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে বিনা বিচারে সর্বনিম্ন তিন মাস এবং সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত আটক রাখা যায় এবং সাধারণত জঙ্গি, বিচ্ছিন্নতাবাদী ও পাথর নিক্ষেপকারীদের বিরুদ্ধে এ আইন প্রয়োগ করতে দেখা যায়।
কিন্তু মূলধারার কোনো রাজনীতিবিদ, বিশেষ করে একজন পার্লামেন্ট সদস্যের বিরুদ্ধে এই আইন প্রয়োগের ঘটনা এটিই প্রথম।
ফারুকের শ্রীনগরের বাড়িকেই এখন কারাগারের মত করে তাকে সেখানে বন্দি করে রাখা হবে।
সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়া আটকানোর কথা বলে জম্মু ও কাশ্মীরের আরো দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুকের ছেলে ওমর আব্দুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতিকেও গত মাস থেকে অনেকটাই গৃহবন্দি করে রাখা হয়।
গত ৬ অগাস্ট এনসিপি নেতা সুপ্রিয়া সুলে লোকসভায় ফারুকের অনুপস্থিতির দিকে আঙুল তুলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমিত শাহ এর কাছে তার কারণ জানতে চান। জবাবে অমিত শাহ বলেছিলেন, “ফারুককে গ্রেপ্তার বা গৃহবন্দি করা হয়নি। তিনি তার নিজের ইচ্ছায় বাড়িতে আছেন।”
সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং কংগ্রেস নেতা গুলাম নবী আজাদও পিএসএ আইনের ফারুককে গ্রেপ্তারের কড়া সমালোচনা করেছেন।