গত বছরের খসড়া নাগরিকপঞ্জিতেও (এনআরসি) ফখরুদ্দিন পরিবারের এ সদস্যরা বাদ পড়েছিলেন। যাচাই বাছাইয়ের পর শনিবার যে চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি প্রকাশিত হল, তাতেও তাদের ঠাঁই মেলেনি।
সাবেক এ রাষ্ট্রপতির পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও অবসরপ্রাপ্ত অনেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছে, জানিয়েছে ইন্ডিয়া টুডে।
এবারের নাগরিকপঞ্জি আসামের ১৯ লাখ বাসিন্দার ভবিষ্যতকে ‘অনিশ্চিত অবস্থার’ দিকে ঠেলে দিয়েছে বলেও মন্তব্য সমালোচকদের।
১৯৭৪ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ফখরুদ্দিন আলি আহমেদ ভারতের পঞ্চম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন; অথচ চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জিতে তার ভাইয়ের ছেলের পরিবারের ৪ সদস্যদেরই স্থান হল না, বলছে ইন্ডিয়া টুডে।
ফখরুদ্দিনের ভাতিজার ছেলে সাজিদ আলি আহমেদ জানান, কেবল তিনিই নন নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকায় এমনকি তার বাবার নামও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এনআরসি থেকে বাদ পড়ে ‘দুশ্চিন্তায়’ আছেন স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (এসবিআই) অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবিমল বিশ্বাসও; তার সঙ্গে তার স্ত্রী এবং এক মেয়ের নামও তালিকায় ওঠেনি।
১৯৪৭ সালে আসামের করিমগঞ্জে জন্ম নেওয়া অবসরপ্রাপ্ত এ কর্মকর্তা বলছেন, নাগরিকপঞ্জিতে পরিবারের ৪ সদস্যের মধ্যে তিনজনের নাম না দেখে তিনি স্তম্ভিত হয়ে পড়েছেন।
“আমার এক মেয়ের নাম তালিকায় স্থান পেয়েছে; আমি, আমার স্ত্রী এবং অন্য মেয়ের নাম ওঠেনি। অথচ আমরা সবাই বংশলতিকার একই কাগজপত্র জমা দিয়েছিলাম,” বলেছেন তিনি।
স্টেট ব্যাংকে যোগ দেয়ার আগে সুবিমল দুই বছর জরিপকারী সংস্থা সার্বে অব ইন্ডিয়া এবং আসামের রাজ্য সরকারের শিক্ষা বিভাগেও (ডিপিআই) কাজ করেছিলেন।
“যখন ছাত্র ছিলাম, ফুটবল খেলতাম, তখনই ডিপিআইতে যোগ দিয়েছিলাম। সেখানে দুই বছর থাকার পর ১৯৬৭ সালে যোগ দিই সার্বে অব ইন্ডিয়াতে। এরপর নতুন চাকরি খোঁজার সিদ্ধান্ত নিই এবং ব্যাংকে আবেদন করি। পরীক্ষা দিয়ে অবশেষে ১৯৭০ সালে এসবিআইয়ে চাকরি পাই। এখন মনে হচ্ছে আমার ভূমি থেকে আমারই নাগরিকত্ব জোর করে কেড়ে নেয়া হচ্ছে,” বলেন ৭৩ বছর বয়সী এ বৃদ্ধ।