চাঁদের কক্ষপথে ভারতের চন্দ্রযান-২

উৎক্ষেপণের পর এক মাসের মাথায় সফলভাবে চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করতে পেরেছে ভারতীয় মহাকাশযান চন্দ্রযান-২।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 August 2019, 10:41 AM
Updated : 20 August 2019, 10:47 AM

মঙ্গলবার ভারতীয় সময় সকাল ৯টা ২ মিনিটে এটি পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহের কক্ষপথে ঢোকে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

কারিগরি ত্রুটিতে উৎক্ষেপণ সপ্তাহখানেক পিছিয়ে যাওয়ার পর গত মাসের ২২ তারিখে শ্রী হরিকোটা মহাকাশ স্টেশন থেকে ৬৪০ টন ওজনের রকেটে এ যানটি যাত্রা শুরু করেছিল।

সাড়ে ১৪ কোটি ডলার ব্যয়ের এ অভিযান সফল হলে চন্দ্রযান-২ হবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামা প্রথম কোনো মহাকাশযান।

সব ঠিক থাকলে তিন লাখ ৮৪ হাজার কিলোমিটার যাত্রাপথ পাড়ি দিয়ে সেপ্টেম্বরের ৬ কিংবা ৭ তারিখে এটি চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করবে বলে আশা ভারতীয় বিজ্ঞানীদের।

২০০৮ সালে ভারত চাঁদের উদ্দেশ্যে তাদের প্রথম মহাকাশযান পাঠিয়েছিল। চন্দ্রযান-১ পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহটিকে স্পর্শ না করলেও এটির রাডার চাঁদে পানির উপস্থিতি নিয়ে বিস্তৃত অনুসন্ধান জানিয়েছিলেন।

এবারের অভিযানে চন্দ্রযান-২ পানির অস্তিত্ব খোঁজার পাশাপাশি চাঁদে খনিজ সম্পদ ও সেখানকার কম্পন পরিমাপ এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে কাজ করবে।

মহাকাশযানটিতে একটি অরবিটার, একটি ল্যান্ডার ও একটি রোভার আছে।

২ হাজার ৩৯৭ কেজির অরবিটারটির জীবনকাল এক বছর; এ সময়ের মধ্যে এটি চন্দ্রপৃষ্ঠের একের পর এক ছবি ‍তুলে তা মহাকাশকেন্দ্রে পাঠাবে।

ল্যান্ডার বিক্রমের ওজন অরবিটারের অর্ধেক, এটি ২৭ কেজি ওজনের রোভারকে বহন করছে। দুই সপ্তাহ জীবনকালের রোভার প্রজ্ঞান সর্বোচ্চ ৫০০ মিটার দূরত্বে ভ্রমণ করতে পারবে; এর মধ্যেই সে চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে সংগ্রহ করা তথ্য ও ছবি পৃথিবীতে পাঠাতে পারবে।

ভারতীয় এ মহাকাশযানের মোট যাত্রাপথ ছয় সপ্তাহের। জ্বালানি বাঁচাতে ও শক্তিশালী রকেটের অভাবে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা মহাকাশযানটিকে গন্তব্যে পৌঁছাতে পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণের উপর নির্ভর করেছেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।

অর্ধশতাব্দী আগে যুক্তরাষ্ট্র শক্তিশালী রকেট ব্যবহার করে চারদিনের মধ্যেই তাদের অ্যাপোলো মিশনকে চাঁদে পাঠিয়েছিল, সেবারই চন্দ্রপৃষ্ঠে প্রথমবারের মতো মানুষের পা পড়েছিল।

ভারতীয় বিজ্ঞানীরা বলছেন, চন্দ্রযান-২ মঙ্গলবার থেকে চাঁদের কক্ষপথ প্রদক্ষিণ শুরু করেছে; মহাকাশযানটির ল্যান্ডারের চাঁদের বুকে নামার ১৫ মিনিট নিয়েই তারা এখন সবচেয়ে বেশি চিন্তিত।

সব ঠিকঠাক কাজ না করলে ওই অবতরণের সময়ই মিশনটির করুণ পরিসমাপ্তি ঘটতে পারে।

এ বছর চাঁদে ইসরাইল একটি মহাকাশযান পাঠালেও চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের আগেই সেটি বিধ্বস্ত হয়ে যায়।