চারবার রাজ্য বিধানসভায় নির্বাচিত কুলদীপের বিরুদ্ধে কিশোরীটির পরিবারের সদস্যদের হুমকি এবং হত্যাচেষ্টারও অভিযোগ রয়েছে।
গত বছর ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের পর ক্ষমতাসীন দলের এ বিধায়ককে গ্রেপ্তার করা হয়।
চলতি সপ্তাহে অভিযোগকারী ওই কিশোরী ও তার আইনজীবীকে বহন করা গাড়িতে একটি ট্রাক ধাক্কা দেয়ার পর ভারতজুড়ে তীব্র সমালোচনার মধ্যে বিজেপি কুলদীপকে বহিষ্কার করল, বলছে এনডিটিভি।
গাড়িতে ট্রাকের ধাক্কায় কিশোরীটির দুই আত্মীয় নিহত হন। গুরুতর আহত ওই কিশোরী এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
কিশোরীটির মায়ের অভিযোগ, তার মেয়েকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যেই কূলদীপ ও তার লোকজন সড়ক দুর্ঘটনার এ নাটক সাজানোর চেষ্টা করে।
অভিযোগকারী কিশোরী ও তার আইনজীবীর গাড়িকে ধাক্কা দেয়া ট্রাকটির নম্বরপ্লেট কালো কালি দিয়ে ঢেকে রাখা ছিল।
২০১৭ সালে উন্নাওয়ের এ ধর্ষণকাণ্ড ভারতজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল; বিধায়কের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষমতাসীন বিজেপির ব্যাপক সমালোচনাও হয়েছিল।
পরের বছর কুলদীপকে আটক করা হলেও আদালত কিশোরী ও তার পরিবারকে হয়রানি এবং ধর্ষণের ঘটনাটিকে অবহেলা করায় প্রশাসনকে তিরষ্কার করে।
বিধায়ক ও তার লোকজনের হুমকির প্রেক্ষিতে কিশোরীটির পরিবার প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে চিঠি লেখার পর সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার উন্নাও ধর্ষণকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চারটি মামলাকে উত্তর প্রদেশ থেকে সরিয়ে দিল্লিতে নিয়ে গেছে।
বিচারকরা একবছর ধরে কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে থাকা ধর্ষণ মামলাটির অগ্রগতি সম্পর্কে সিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দিয়েছেন; কিশোরীকে বহন করা গাড়িটিতে ট্রাকের ধাক্কার ঘটনার তদন্ত ৭দিনের মধ্যে শেষ করতেও বলেছেন তারা।
সর্বোচ্চ আদালতের এসব আদেশের কয়েক ঘণ্টা পর বিজেপি কুলদীপকে দল থেকে বহিষ্কারের কথা জানায়।
২০১৭ সালে এক আত্মীয়ের সঙ্গে কুলদ্বীপের উন্নাওয়ের বাড়িতে চাকরির তদ্বিরে যান ওই কিশোরী। সেসময় বিজেপির এ বিধায়ক ও তার সঙ্গীসাথীরা কিশোরীটিকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ।
ওই ঘটনার বিচারের দাবিতে ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বাড়ির সামনে আত্মহুতি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন ওই কিশোরী ও তার মা। ওই সময় এ ঘটনা ভারতজুড়ে সংবাদের শিরোনাম হয়েছিল।
কিশোরীর মামলা এগিয়ে নিতে সহায়তা করছিলেন তার বাবা। কিন্তু একটি অস্ত্র মামলায় তাকে আটক করে দুই দিন হেফাজতে রাখে পুলিশ। ওই সময় তাকে বেদম প্রহার করা হয়।
কুলদ্বীপ সেঙ্গারের ভাই তাকে প্রহারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ।
পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় হতাশ হয়ে ওই কিশোরী যে দিন আত্মহত্যার চেষ্টা করে তার পরদিন তার বাবা শরীরে আঘাতজনিত কারণে হাসপাতালে মারা যান।
পুলিশ পরে উত্তর প্রদেশের বাঙ্গেরমাউ থেকে চারবারের নির্বাচিত বিধায়ক কুলদ্বীপ সেঙ্গার ও তার ভাইকে গ্রেপ্তার করে।