আফগানিস্তানে ৬ মাসেই হতাহত প্রায় ৪০০০ বেসামরিক নাগরিক

আফগানিস্তানে সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে লড়াইয়ে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসেই অন্তত ৩ হাজার ৮১২ বেসামরিক লোক হতাহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2019, 09:46 AM
Updated : 30 July 2019, 10:48 AM

দেশটির পশ্চিমা সমর্থিত সরকার ও নেটো নেতৃত্বাধীন বাহিনীর কারণেই হতাহতের এ সংখ্যা আগের বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেড়েছে, মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ এমনটাই বলেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটিতে দেড় যুগ ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধে তালেবান প্রতিনিধিদের সঙ্গে মার্কিন কর্মকর্তাদের আলোচনার মধ্যেই আফগানিস্তানে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা নিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করলো জাতিসংঘ।

মার্কিন মধ্যস্থতাকারীরা আগামী ১ সেপ্টেম্বরের আগেই তালেবানের সঙ্গে একটি শান্তিচুক্তির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

কূটনৈতিক এ তৎপরতার মধ্যেই দেশটিতে যুদ্ধের তীব্রতা আগের তুলনায় বেড়েছে; স্থলে বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধের পাশাপাশি আফগান সরকার ও নেটো-নেতৃত্বাধীন বাহিনীর বিমান হামলাগুলোও বেসামরিকদের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। 

আফগানিস্তানে জাতিসংঘের সহায়তা মিশনের (ইউএনএএমএ) সর্বশেষ প্রতিবেদনে স্থল অভিযান ও সংঘাতের ফলেই দেশটিতে সবচেয়ে বেশি বেসামরিক হতাহত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। হতাহতের কারণ হিসেবে এর পরের দুটি স্থানে আছে যথাক্রমে বোমা হামলা ও বিমান হামলা।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত তালেবান ও ইসলামিক স্টেটের হাতে ৫৩১ আফগান নিহত এবং এক হাজার ৪৩৭ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএনএএমএ।

কট্টরপন্থি এ গোষ্ঠী দুটি পরিকল্পিতভাবেই ৯৮৫ জন বেসামরিকের ওপর হামলা চালিয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। হামলার শিকার এসব লোকজনের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন আদিবাসী নেতা, দাতা সংস্থার কর্মী ছাড়াও ধর্মীয় নেতারা আছেন।

এ ছয় মাসে সরকার সমর্থকদের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৭১৭ বেসামরিক আফগান; আহত হয়েছেন আরও ৬৮০ জন। এ সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩১ শতাংশ বেশি বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

চলতি বছর নিহতদের মধ্যে ১৪৪ জন নারী ও ৩২৭টি শিশুও আছে; দেশজুড়ে আহত নারী-শিশুর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে, বলেছে জাতিসংঘের এ মিশন।

বিমান হামলায় হতাহতের সংখ্যা ৫১৯, এর মধ্যে শিশুর সংখ্যাই দেড়শ, জানিয়েছে তারা।

সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানে আফগান বাহিনীকে প্রশিক্ষণ, সহায়তা ও পরামর্শ দেওয়ার কার্যক্রমের আওতায় মার্কিন ও নেটোভুক্ত অন্যান্য দেশের স্বল্প সংখ্যক সৈন্য এখন দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটিতে অবস্থান করছে।

বেসামরিক হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে ইউএনএএমএ-র কর্মপদ্ধতি এবং প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল সনি লেগেট।

জাতিসংঘের এ মিশনের তুলনায় বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে মার্কিন বাহিনীর তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া ‘অনেক তথ্যসমৃদ্ধ, পুঙ্খানুপুঙ্খ ও সঠিক’ বলেও দাবি করেছেন তিনি।

জাতিসংঘের এ প্রতিবেদন বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আফগানিস্তান সরকার কিংবা তালেবানের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।