বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত এ সন্ত্রাসী সংগঠনটির প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাওয়াহিরি এই হুমকি সম্বলিত বার্তা দেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
‘কাশ্মীরকে ভুলো না’ শিরোনামের এ ভিডিও বার্তায় আল-কায়েদাপ্রধান কাশ্মীর সীমান্তে সন্ত্রাসে উসকানি নিয়ে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতার বিষয়েও কথা বলেন।
“আমার দৃষ্টিতে কাশ্মীরের মুজাহিদদের অন্তত এই পর্যায়ে এসে ভারতীয় বাহিনী ও সরকারের ওপর কঠোর আঘাত হানার দিকেই এককভাবে মনোযোগী হওয়া উচিত; এর ফলে ভারতের অর্থনীতিতে রক্ত ঝরবে, জনবল ও সরঞ্জামের ক্ষয়ক্ষতিতে মুখ থুবড়ে পড়বে তারা,” একপাশে বন্দুক অন্যপাশে কোরান নিয়ে জাওয়াহিরিকে এমনটাই বলতে শোনা যায়।
নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা চলতি বছরের মে মাসে এ জঙ্গিকে হত্যা করে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালাতে আল-কায়েদা যে গোষ্ঠীগুলোকে প্রস্তুত করেছিল মুসার ‘আনসার গাজওয়াত-উল-হিন্দ’ ছিল তার শুরুর দিককার একটি।
জাওয়াহিরি তার বার্তায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও সরকারকে ‘আমেরিকার পা চাটা’ অ্যাখ্যা দিয়ে এদের ফাঁদে পা না দিতেও অনুসারীদের আহ্বান জানিয়েছেন।
“পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং সরকারের আগ্রহ হচ্ছে- সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক লক্ষ্যে মুজাহেদিনদেরকে ব্যবহার ও পরে ছেঁটে ফেলা,” বলেছেন তিনি।
সীমান্ত ঘিরে পাক-ভারতের সংঘাতকে মার্কিন গোয়েন্দাদের মদদপুষ্ট ‘দুনিয়াবি লড়াই’ বলেও অভিহিত করেন এ আল-কায়েদা নেতা।
কাশ্মীরের লড়াই বিচ্ছিন্ন নয়, এটি বিশ্বজুড়ে চলা লড়াইয়েরই অংশ- এ বিষয়টি ঠিকমতো প্রচার করতে তিনি ইসলামি পণ্ডিতদেরকেও অনুরোধ জানান।
“যতক্ষণ পর্যন্ত মুসলমানদের ভূমি থেকে দখলদার অবিশ্বাসীদের তাড়িয়ে দেওয়ার মতো শক্তি অর্জিত না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত কাশ্মীরে, ফিলিপিন্সে, চেচনিয়ায়, মধ্য এশিয়ায়, ইরাকে, সিরিয়ায়, আরব উপত্যকায়, সোমালিয়ায়, ইসলামিক মাগরেব ও তুর্কেমেনিস্তানের জিহাদকে সমর্থন করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য, এটা আপনারা (পণ্ডিতরা) স্পষ্ট করে বলবেন,” বলেন জাওয়াহিরি।
অনুসারীদের ‘মসজিদ, বাজার কিংবা মুসলমানদের জড়ো হওয়ার স্থানে’ হামলা না চালানোর জন্যও নির্দেশনা দেন এ আল-কায়েদাপ্রধান।
ভারতীয় গোয়েন্দারা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে অসংখ্য জঙ্গি নিহত ও তাদের আস্তানা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ায় হতদ্যম অনুসারীদের উৎসাহ দিতেই জাওয়াহিরিকে ভিডিও বার্তা নিয়ে হাজির হতে হয়েছে।
“জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলা কমে এসেছে, নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে জঙ্গিদের নিহত হওয়ার পরিমাণ বেড়েছে। জঙ্গি অনুসারীদের উৎসাহ দেয়ার চেষ্টার অংশ হিসেবেই এই ভিডিও,” বলেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।