চোর সন্দেহে মুসলিম যুবককে পিটিয়ে খুন, গ্রেপ্তার ৫

ভারতের ঝাড়খণ্ডে মুসলিম এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বরখাস্ত হয়েছেন দুই পুলিশ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2019, 04:21 PM
Updated : 24 June 2019, 04:40 PM

এনডিটিভি জানায়, গত মঙ্গলবার মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগ তুলে একদল লোক ২৪ বছরের তাবরেজ আনসারিকে লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করে।

মারধরের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠে।

তার এক স্বজন সাংবাদিকদের বলেন, তাবরেজ মঙ্গলবার কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে জামশেদপুর থেকে কারসোভায় নিজের বাড়িতে যাচ্ছিলেন।

“বাড়ি থেকে ‍তারা যখন জোর পাঁচ কিলোমিটার দূরে তখন মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগ এনে একদল লোক তাদের উপর হামলে পড়ে।

“বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে কয়েক ঘণ্টা ধরে তাবরেজকে পেটানো হয়।”

মারধরের ওই ভিডিওতে এক পর্যায়ে হামলাকারীদের তাবরেজকে ‘জয় শ্রী রাম’ ‘জয় হনুমান’ বলার কথা বলতে শোনা যায়।

প্রাণরক্ষায় তাবরেজ তাদের সঙ্গে সঙ্গেই ‘জয় শ্রী রাম’ ‘জয় হনুমান’ বলছিল।

কিন্তু তাতেও রক্ষায় হয়নি। মারতে মারতে অজ্ঞান হয়ে পড়ার পর তাবরেজকে পুলিশের হাতে দেওয়া হয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

পুলিশ গুরুতর আহত তাবরেজকে আটকের চারদিন পর কারা হেফাজত থেকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তাবরেজের পরিবারের সদস্যরা বলেন, তারা পুলিশের কাছে বার বার তাবরেজের চিকিৎসার অনুরোধ করলেও পুলিশ তা আমলে নেয়নি।

“উল্টো আমাদেরকে তার সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। হাসপাতালে নেওয়ার অনেক আগেই সে মরে গিয়েছিল। আমরা সরকারের কাছে বিচার চাই।”

তাবরেজের স্ত্রী শাহিস্তা পারভিনের দাবি, মুলমান হওয়ার কারণে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

“শুধু মুসলমান হওয়ায় তাকে এমন নিষ্ঠুরভাবে মারধর করা হয়। আমার আর কেউ নেই, এমনকি শ্বশুর বাড়ির কেউও নেই। আমার স্বামীই আমার একমাত্র অবলম্বন ছিল। আমি বিচার চাই।”

তাবরেজের ঘটনা প্রকাশের পর দেশজুড়ে পুলিশের আচরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ শুরু হলে শেষ পর্যন্ত পুলিশ নিজেদের গাফিলতির কথা স্বীকার করে ঘটনা তদন্তে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে।

এছাড়া ‘পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে অবহিত না করায়’  দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।