শ্রীলঙ্কার সেই জাহরান হাশিম হামলার সময়ই নিহত

শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডের দিন আত্মঘাতী বোমা হামলার ‘হোতা’ জাহরান হাশিম নিহত হয়েছে বলে জানান প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা।

নিউজডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 April 2019, 08:56 AM
Updated : 26 April 2019, 10:31 AM

সিরিসেনা শুক্রবার সংবাদিকদের বলেন, “গোয়েন্দা সংস্থা থেকে আমাকে শাংরি লা হোটেলে হামলার সময় জাহরান নিহত হওয়ার খবর দেওয়া হয়েছে। তার নেতৃত্বে শাংরি লা হোটেলে আত্মঘাতী হামলাকারী দ্বিতীয় ব্যক্তির নাম ইলহাম।

“গোয়েন্দা তথ্য এবং ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বিষয়টি জানা গেছে।” 

গত ২১ এপ্রিল ইস্টার সানডের সকালে তিনটি গির্জা ও চারটি হোটেলে একযোগে আত্মঘাতী হামলার পর শ্রীলঙ্কায় জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। পুরো দেশে মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার সেনা। 

ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপ দেশে এক দশকের মধ্যে ভয়ঙ্করতম ওই আত্মঘাতী হামলায় অন্তত ২৫৩ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন পাঁচ শতাধিক মানুষ।

শ্রীলঙ্কা সরকার বলেছে, হামলায় এক নারীসহ মোট নয়জনের অংশ নেওয়ার তথ্য রয়েছে তাদের কাছে, তাদের সবাই শ্রীলঙ্কার নাগরিক।

জাহরান হাশিম ন্যাশনাল তাওহীদ জামায়াত (এনটিজে) নামে স্থানীয় একটি উগ্রপন্থি ইসলামিক দলের নেতা বলে ধারণা পুলিশের।

হামলার পর গত মঙ্গলবার মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গি দল আইএস হামলার দায় স্বীকার করে একটি ভিডিও প্রকাশ করে। যেখানে সংগঠনের কালো পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে আইএস নেতা আবু বকর আল-বাগদাদির নামে শপথ নিতে দেখা যায় আটজনকে।

আইএসের দাবি, ওই আটজনই ইস্টার সানডের দিন আত্মঘাতী হামলায় অংশ নেয়। ওই আট জনের মধ্যে সাত জনের মুখ ছিল ঢাকা। একমাত্র যে ব্যক্তির মুখ সেখানে দেখা গেছে, তিনি জাহরান হাশিম।

আইএসের সঙ্গে যোগাযোগ আছে এমন ১৩০ জন এখনো শ্রীলঙ্কায় আছেন বলে বিশ্বাস দেশটির গোয়েন্দা সংস্থার। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে, পুলিশ এখনো ৭০ জনকে খুঁজছে বলে জানান সিরিসেনা।

কে এই জাহরান:

জাহরানের পরিবারের দাবি, তারা তার হামলায় জড়িত থাকার বিষয়টি আঁচ করতে পারেনি।

তার বোন হাশিম মাদানিয়া বিবিসিকে বলেছেন, ইস্টার সানডের হামলা আর তাতে জাহরানের ভূমিকা নিয়ে যেসব কথা বলা হচ্ছে, তা তিনি গণমাধ্যমের খবর থেকেই ‘প্রথম জানতে পেরেছেন’। জাহারান এরকম কিছু করতে পারেন, তা তিনি কখনও ‘কল্পনাও করেননি’। 

“সে আমার ভাই, কিন্তু সে যা করেছে এটা আমি কোনোভাবেই মানতে পারছি না। তাকে নিয়ে আমি আর ভাবতে চাই না।”

তামিলভাষী জাহরান গত বছর তিনেক ধরে কট্টর শরিয়া আইনের প্রচার করে আসছিলেন। নিজের ফেইসবুক ও ইউটিউব অ্যাকাউন্টে ধর্মীয় উসকানিমূলক বিভিন্ন ভিডিও পোস্ট করে আসছিলেন তিনি।

ওই প্রচারের মাধ্যমেই নিজের অনুসারীদের মধ্যে রীতিমত তারকায় পরিণত হন জাহরান। তবে শ্রীলঙ্কায় সংখ্যালঘু মুসলমানদের অনেক সংগঠনই তার কর্মকাণ্ড নিয়ে শঙ্কিত হয়ে ওঠে।

শ্রীলঙ্কার তিনজন মুসলিম নেতা রয়টার্সকে বলেছেন, তারা গত তিন বছরে কয়েকবার জাহরানের বিষয়ে প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, নিজেদের উদ্বেগের কথা বলেছেন। কিন্তু তাতে সাড়া মেলেনি।