সহকারীকে যৌন হেনস্থার কথা অস্বীকার ভারতের প্রধান বিচারপতির

আদালতের কনিষ্ঠ এক সহকারী আনা যৌন হেনস্থার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2019, 02:05 PM
Updated : 20 April 2019, 02:32 PM

প্রধান বিচারপতির বাসভবনের দপ্তরে এই হেনেস্থার ঘটনা ঘটেছিল এবং পরে পরিবারসহ তিনি এ ঘটনার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই নারী, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

দেশটির সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে নজিরবিহীন এ অভিযোগ আসার পর জরুরি ভিত্তিতে শুনানির ডাক দেয় সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বিশেষ বেঞ্চ, জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা।

শনিবার শুনানিকালে ওই বেঞ্চের প্রধান গগৈ মন্তব্য করেন, “এই অভিযোগ অবিশ্বাস্য। এই অভিযোগ অস্বীকার করতে গেলে যতটা নিচে নামতে হয় তার জন্য আমি প্রস্তুত নই।”

বিস্তারিত কিছু না জানিয়ে গগৈ বলেছেন, এই অভিযোগের ঘটনা প্রমাণ করেছে ভারতের বিচারব্যবস্থা ‘গুরুতর হুমকির’ মুখে আছে এবং বড় ধরনের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিচারব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে। 

“ওই নারীর পিছনে বড় কোনো শক্তি আছে,” বলেছেন তিনি।

শনিবার বেশ কয়েকটি ভারতীয় অনলাইন নিউজ সাইটে ওই যৌন হেনেস্থার পুরো অভিযোগ প্রকাশ পায়। সেগুলো অক্টোবরে ঘটেছে বলে বলা হয়েছে। ওই নারীর পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। 

শুক্রবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ২২ জন বিচারকের কাছে লেখা চিঠি ও সঙ্গে দেওয়া হলফনামায় ৩৫ বছর বয়সী ওই নারী তার অভিযোগের বিস্তারিত বিবরণ দেন।  

অভিযোগে ওই নারী জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের ১০ এবং ১১ অক্টোবর রঞ্জন গগৈ তাকে তার নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে যৌন হেনেস্থা করেছিলেন।

ওই নারী আরও জানান, এ ঘটনার পর তার ও তার পরিবারের জীবনে দুর্ভোগ নেমে আসে, কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করে, এরপর দিল্লি পুলিশ বাহিনীতে চাকরিরত তার স্বামী ও ভাইকেও বরখাস্ত করা হয়।

তার স্বামীর আরেক ভাইকেও সুপ্রিম কোর্টের চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়। 

এরপর তার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার ‘মিথ্যা’ অভিযোগ আনা হয় এবং ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় ও পরে জামিন দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ওই নারী।  

বিচারকদের কাছে লেখা চিঠিতে ওই নারী বলেন, “ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর যৌন আহ্বানে রাজি না হওয়ার পরিণামেই আমি ও আমার পরিবার ধারাবাহিক প্রতিশোধমূলক নিগ্রহণের শিকার হয়েছি।”

বিশেষ শুনানিতে তিন সদস্যের বেঞ্চের প্রবীণতম বিচারপতি অরুণ মিশ্র এসব অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন ও বেপরোয়া’ বলে মন্তব্য করেছেন।

এ মুহূর্তে এ অভিযোগের কোনো রায় দেওয়া সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছে বেঞ্চ।

বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা ও ভাবমূর্তি যেন ক্ষুণ্ণ না হয়, সে দিকে লক্ষ্য রেখে এ মামলার সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে সংযত ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছে আদালত।