ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারির জঙ্গি হামলায় ৪০ জনের বেশি জওয়ান নিহত হওয়ার প্রতিশোধ নিতে মঙ্গলবার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) পেরিয়ে পাকিস্তানের বালাকোটে জইশ-ই-মোহাম্মদের এ ক্যাম্পে বোমা হামলা চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনী।
জঙ্গিরা পুলওয়ামা হামলার পর পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর সীমান্তে হামলা হতে পারে আঁচ করেই সীমান্ত ছেড়ে পিছিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছিল এ বিলাসবহুল ক্যাম্পে। ভারত নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে এত গভীরে ঢুকে হামলা চালাতে পারে এমনটি ভাবতে পারেনি তারা।
পিটিআই এর প্রতিবেদন অনুযায়ী,পাহাড়ের চূড়ায় জঙ্গলের ভেতরের এ শিবিরে পাঁচশ থেকে সাতশ মানুষ থাকার মত জায়গা আছে। সেখানে আছে সুইমিংপুল; রান্নার লোক এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীও।
দিল্লিতে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে বলেন, “ওই প্রশিক্ষণ শিবির এতটাই বড় এবং আধুনিক যে সেখানে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে শত শত জঙ্গিকে প্রশিক্ষণ দেওয়াও সম্ভব।”
কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে বালাকোটের দূরত্ব ৮০ কিলোমিটার। বালাকোটের কাছেই অ্যাবোটাবাদে আত্মগোপন করে ছিলেন আল-কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেন, সেখানেই তাকে হত্যা করেছিল মার্কিন সেনারা।
বালাকোটে হামলায় প্রায় ‘৩২৫ জঙ্গি এবং ২৫ জনের বেশি প্রশিক্ষক নিহত হয়েছে’ বলে দাবি ভারত সরকারের। যদিও পাকিস্তান সরকার প্রাণহানির ওই খবর ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
ভারতের এক সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে পিটিআই জানায়, “বিমান হামলার সময় ঘাঁটিতে জঙ্গিরা ঘুমিয়ে ছিল। পাকিস্তানের সেনারাও নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে তাদের দেশের এত গভীরে বোমাবর্ষণের বিষয়টি আঁচ করতে পারেনি। তারা নিয়ন্ত্রণ রেখার আশেপাশে সার্জিক্যাল অপারেশন হতে পারে বলে ধারণা করেছিল।”
কয়েকটি বিমানঘাঁটি থেকে একই সময়ে জঙ্গিবিমান এবং অন্যান্য উড়োজাহাজ উড্ডয়ন করায় পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা সেগুলোর গন্তব্য নিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
প্রায় ৩২৫ জন জঙ্গি এবং ২৫ থেকে ২৭ জন প্রশিক্ষক ক্যাম্পটিতে গিয়েছিল। ক্যাম্পটি একসময় ব্যবহার করত হিজবুল মুজাহিদিন। জঙ্গিদের উদ্বুব্ধ করতে এখানেই ভাষণ দিতেন জইশ প্রধান।