শুক্রবার হরিয়ানার বিশেষ আদালত তিন সহযোগীসহ তাকে দোষী সাব্যস্ত করে।
ছত্রপতিকে গুলি করে হত্যার দায়ে বৃহস্পতিবার এ চারজনের সাজা ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি, বিবিসি।
উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় শহর সিরসায় ডেরা সাচ্চা সওদা আশ্রমের সদরদপ্তরে নারী নির্যাতনের ঘটনা সম্পর্কিত একটি চিঠি নিজের পত্রিকা ‘পুরা সাচ’-এ তুলে ধরেন রাম চান্দের ছত্রপতি।
২০০২ সালে রাম রহিমের অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ভক্তের লেখা ওই চিঠিতে আশ্রমের ভেতর নানা ধরনের যৌন হয়রানির ঘটনার বিবরণ দেওয়া হয়, যা বিতর্কিত এ ধর্মগুরুর মুখোশ উন্মোচনে বড় ধরনের ভূমিকা রাখে।
হিন্দিভাষী এ পত্রিকায় এমন চিঠি ছাপার পরই ক্ষেপে যান ডেরা সাচ্চা সওদার প্রধান। সহযোগীদের ‘পুরা সাচ’ পত্রিকার সম্পাদককে হত্যারও নির্দেশ দেন তিনি।
চিঠি ছাপা হওয়ার ৫দিন পর ওই বছরের ২৪ অক্টোবর রাম রহিমের সহযোগীরা বাড়ির বাইরে ছত্রপতিকে গুলি করে। আহত সাংবাদিক চিকিৎসাধীন অবস্থায় নভেম্বরে মারা যান।
‘পুরা সাচ’ এ ছাপা হওয়া ওই চিঠির সূত্র ধরেই রাম রহিমের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিস্তৃত তদন্ত শুরু হয়। যার ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের অগাস্টে হরিয়ানার আদালত ধর্ষণের দায়ে বিতর্কিত এ ধর্মগুরুকে ২০ বছরের কারাদণ্ডও দেয়।
ডেরা সাচ্চা সওদাপ্রধানের ওই সাজাকে ঘিরে ভারতজুড়ে বিভিন্ন শহরে পুলিশের সঙ্গে ভক্ত-অনুসারীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অন্তত ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
শুক্রবার রাম রহিমের সঙ্গে তার তিন সহযোগী- কুলদীপ সিং, নির্মল সিং ও কৃষাণ লালকেও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
হরিয়ানার পাঁচকুলার বিশেষ আদালতে ৫১ বছর বয়সী বিতর্কিত এ ধর্মগুরুকে এদিন ভিডিও লিংকের মাধ্যমে হাজির করা হয়; অন্য অভিযুক্তরা ছিলেন সশরীরেই।
বিচার কার্য চলার সময় পুরো রাজ্য ও পাঞ্জাবের কিছু অংশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। এ দুই রাজ্যেই ‘স্বঘোষিত গডম্যান’ রাম রহিম ও ডেরা সাচ্চা সওদার অনুসারী বেশি।
২০০২ সালে বাবার মৃত্যুর পর আনুশেল ছত্রপতি ‘পুরা সাচ’ পত্রিকার দায়িত্ব ঘাড়ে নিয়ে আশ্রমে নারী নির্যাতন ও যৌন হয়রানির অভিযোগগুলোকে চূড়ান্ত পরিণতি দিতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেন।
পত্রিকায় রাম রহিম ও তার আশ্রমের ভেতরে যৌন হয়রানির চিঠিটি প্রকাশের পর সহকর্মীরা রাম চন্দ্র ছত্রপতিকে সতর্ক করেছিল বলেও জানান আনুশেল।
“বাবা বলেছিলেন, সত্যিকারের সাংবাদিক বুলেটই নেয়, জুতা নয়।”
২০১৭ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আনুশেল জানান, বাবার কাজ এগিয়ে নিতে তিনি শুরু থেকেই ছিলেন দৃঢপ্রতিজ্ঞ।
“সত্যের জন্য আমার বাবা তার জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমি তার এ আত্মত্যাগকে বৃথা হয়ে যেতে দিতে পারি না,” বলেছিলেন তিনি।