সম অধিকারের দাবি নিয়ে ৬২০ কিলোমিটার মানববন্ধনে ভারতের নারীরা

ভারতের প্রভাবশালী একটি হিন্দু মন্দিরে নারীদের প্রবেশাধিকার নিয়ে চলা বিরোধের মধ্যে ‘লৈঙ্গিক সমতার সমর্থনে’ কেরালায় ৬২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মানব শিকল তৈরি করেছেন নারীরা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Jan 2019, 04:30 AM
Updated : 2 Jan 2019, 04:46 AM

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালার সবরীমালা মন্দিরে ঐতিহ্যগতভাবেই ঋতুমতী নারীদের প্রবেশ করা নিষেধ; ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারীরা এ নিষেধাজ্ঞার আওতায়।

এই ব্যবস্থা ভারতীয় সংবিধানের পরিপন্থী বিবেচনায় সেপ্টেম্বরে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত এ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে রায় দেয়; কিন্তু তারপর থেকে মন্দিরটির উদ্দেশ্যে আসা নারী দর্শনার্থীরা প্রতিবাদকারীদের হামলার মুখে পড়ছেন।

এই পরিস্থিতিতেই কেরালার বামপন্থী জোট সরকারের উদ্যোগে এ ‘নারীপ্রাচীর’ গড়ে তোলা হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।

কেরালার সব জাতীয় মহাসড়কজুড়ে এ প্রাচীর গড়ে তুলতে রাজ্যের বিভিন্ন অংশ থেকে প্রায় ৫০ লাখ নারী যোগ দিয়েছিলেন বলে বিবিসি হিন্দিকে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। কেরালার সর্ব উত্তরের শহর কাসরাগড থেকে সর্ব দক্ষিণের শহর থিরুভানথাপুরাম পর্যন্ত এই নারী শিকল বিস্তৃত ছিল বলে জানিয়েছেন তারা।

কেরালার সর্ব উত্তরের শহর কাসরাগড থেকে সর্ব দক্ষিণের শহর থিরুভানথাপুরাম পর্যন্ত এই নারী শিকল বিস্তৃত ছিল। ছবি: বিবিসি

উদ্যোক্তারা এই মানবপ্রাচীরে ৩০ লাখের মতো জমায়েত আশা করলেও উপস্থিতির সংখ্যা তাদের প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে যায়।    

কেরালার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অসাম্য ও সবরীমালা মন্দিরে ঋতুমতী নারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার প্রতি সমর্থন জানানো ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলোর উদ্যোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রত্যয়েই এই মানব শিকল গড়ে তুলে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

অংশগ্রহণকারী তরুণী কবিতা দাস বলেন, “নারীরা কতো ক্ষমতাবান এবং কীভাবে আমরা নিজেদের ক্ষমতাবান করতে তুলতে পারি ও একে অপরকে সাহায্য করতে পারি তা বলার দুর্দান্ত উপায় এ উদ্যোগ।

“সব বয়সী নারীদের ওই মন্দিরে প্রবেশের অধিকারকে সমর্থন করি আমি। ঐতিহ্য বা কোনো ধরনের পশ্চাৎপদতা নারীদের থামাতে পারবে বলে আমি মনে করি না। যারা প্রার্থনা করতে চায় তাদের অবশ্যই প্রার্থনা করার অধিকার আছে।”

অংশ নেওয়া আরেক নারী তনুজা ভাত্রাদ্রি বলেন, “আজকের প্রধান ইস্যু সবরীমালা নয়, আমি বিশ্বাস করি নারী-পুরুষের সাম্যতায়।”