রাফাল যুদ্ধবিমান ক্রয় বিতর্কে মোদীর পক্ষে আদালত

ফ্রান্স থেকে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান ক্রয়ের সরকারি সিদ্ধান্ত যাচাইয়ে তদন্তের দাবি খারিজ করে দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।

নিউজডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2018, 10:30 AM
Updated : 14 Dec 2018, 10:31 AM

এনডিটিভি জানায়, শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ এ চুক্তিতে ‘হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই’ বলে রায় দেয়।

২০১৫ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফ্রান্স সফরের সময় ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান ক্রয়ের চুক্তি ঘোষণা করেন। ফরাসি উড়োজাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান দাসোঁ থেকে সেগুলো কেনা হবে।

পরের বছর ফ্রান্সের তৎকালীণ প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া অলন্দের দিল্লি সফরের সময় ওই চুক্তি চূড়ান্ত হয়।

৫৯ হাজার কোটি রুপি চুক্তির ১৫ শতাংশ অর্থ অগ্রিম দেয় ভারত। মোদী সরকারের ‘মেক ইন্ডিয়া’ নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ভারতের আরও ৯০টি যুদ্ধবিমান তৈরি করার চুক্তি হয় এবং ওই কাজ পান ভারতীয় ব্যবসায়ী অনিল আম্বানির কোম্পানি রিলায়েন্স ডিফেন্স ইন্ডাষ্ট্রিজ।

চুক্তিতে `রিলায়েন্স ডিফেন্স’র ঢুকে পড়া নিয়েই বিতর্কের শুরু।

যুদ্ধবিমান তো দূরের কথা, কোনো ধরনের বিমান তৈরির অভিজ্ঞতাই রিলায়েন্স ডিফেন্সের নেই বলে জানিয়েছিল আনন্দবাজার পত্রিকা।

উড়োজাহাজ তৈরিতে একেবারেই অনভিজ্ঞ একটি কোম্পানি রাফালের মতো উন্নত যুদ্ধবিমান তৈরির চুক্তিতে কী ভাবে ঢুকে পড়ল, বিতর্ক এ নিয়েই।

এর ব্যাখ্যায় মোদী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন ‘হিন্দুস্তান এরোনোটিক্স লিমিটেড (হ্যাল)’-রও যুদ্ধবিমান তৈরির কোনও অভিজ্ঞতা নেই।

কিন্তু সরকারের এ দাবিকে নাকচ করে দিয়ে হ্যালের সাবেক প্রধান টি সুবর্ণ রাজু বলেছিলেন, “যে সুখোই এখন ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রধান অস্ত্র, চতুর্থ প্রজন্মের সেই যুদ্ধবিমান যদি হ্যাল কাঁচামাল থেকে তৈরি করতে পারে, তাহলে রাফাল তৈরির ক্ষমতাও আমাদের ছিল।”

ভারতে প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী সরাসরি মোদীকে `চোর’ বলেছিলেন। তার অভিযোগ ছিল, “মোদীই দেনায় ডুবে থাকা অনিলের কোম্পানিকে রাফালের চুক্তি পাইয়ে দিয়েছেন।”

রাফাল যুদ্ধবিমান নিয়ে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যহারের অভিযোগের মধ্যেই গত সেপ্টম্বরে বোমা পাঠান অলন্দ। ফরাসি সাময়িকী মিডিয়াপার্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ‘মোদী সরকার ভারতীয় ব্যবসায়ী অনিল আম্বানীর কোম্পানিকে চুক্তির অংশীদার করতে ফ্রান্সকে বাধ্য করেছি’ বলে দাবি করেন। যে কারণে চাপে পড়ে গিয়েছিল মোদী সরকার।

যদিও শুরু থেকেই দাসোঁ ও ভারত সরকার উভয়ই সব ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ  উড়িয়ে দিয়েছে।

শুক্রবারের রায়ে বলা হয়, আদালত এই চুক্তিতে ‘হস্তক্ষেপের’ কোনো কারণ খুঁজে পায়নি।

“যে প্রক্রিয়ায় যুদ্ধবিমানগুলো কেনার চুক্তি করা হয়েছে সেখানে সন্দেহের কিছু নেই।”

সুপ্রিম কোর্টের রায় আসার পর এক বিবৃতিতে অনিল আম্বানী আদালতের সিদ্ধান্তকে ‘স্বাগত’ জানিয়েছেন।