অপর্যাপ্ত রেশন, ‘চীনা খাবার’ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন উত্তরাখন্ডের উপজাতিরা

পর্যাপ্ত রেশন না মেলায় ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় একটি রাজ্যের বেশ কয়েকটি পাহাড়ি গ্রামের উপজাতিরা চীনা খাদ্যশস্য কিনতে বাধ্য হচ্ছেন বলে সেখানকার স্থানীয় নেতারা দাবি করেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Oct 2018, 10:28 AM
Updated : 7 Oct 2018, 10:28 AM

রাজ্য সরকারের সরবরাহ করা রেশন পরিমানের তুলনায় এতই কম যে উত্তরাখন্ডের কুমাওন এলাকার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের পার্শ্ববর্তী দেশ নেপাল থেকে ‘চাইনিজ ফুড’ কিনতে হচ্ছে, বলছেন তারা।

“রাজ্য সরকার যে পরিমান রেশন সরবরাহ করে, তা আমাদের চাহিদার তুলনায় অনেক কম। সে কারণেই গ্রামবাসীদের অনেকেই নেপালের বাজার থেকে চীনা খাদ্যশস্যের ওপর নির্ভর করা শুরু করেছেন,” বলেন উপজাতি নেতা কৃষ্ণ গ্যাব্রিয়েল। 

সরকারি সরবরাহ ব্যবস্থাপনার (পিডিএস) আওতায় আরও রেশনের দাবিতে শুক্রবার দারচুলা সাব ডিভিশন ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে ভায়াস ভ্যালির গ্রামবাসীদের যে প্রতিনিধিরা দেখা করেন, কৃষ্ণ তাদের একজন ছিলেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

প্রতিনিধিরা জানান, ভারত ও নেপালকে সংযুক্তকারী গ্রাম গারবিয়াংয়ের কাছে কালি নদীর ওপর অবস্থিত সেতু পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের তিংকার ও চাংরু বাজার থেকে সীমান্তবর্তী উপজাতিদের খাবার কিনতে হচ্ছে।

“সরকার আমাদের জন্য প্রতি মাসে পরিবার প্রতি ৫ কেজি গম ও ২ কেজি চাল বরাদ্দ দেয়, যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। গম ও ধান হয় না এমন উঁচু এলাকায় বসবাস করা পরিবারগুলোর জন্য রেশনের কোটা বাড়াতে আমরা বেশ কয়েকবারই দাবি জানিয়েছি,” বলেন কৃষ্ণ।

রেশনের স্বল্পতাই কেবল নয়, নির্ধারিত রেশনও ঠিক সময়ে পৌঁছায় না বলেও অভিযোগ তাদের। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে সর্বশেষ রেশন এসেছিল, জানান গ্রাম প্রতিনিধিরা।

ছয় মাস ধরে মাংতি থেকে গুনজি পর্যন্ত ৪৯ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সড়কের সংস্কার চলায় চলতি বছর গ্রামবাসীদের কাছে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রেশন পাঠানোর কাজ কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন দারচুলার সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটও।

“বর্ষার শুরুতে ভায়াস ভ্যালির গ্রামগুলোতে হেলিকপ্টারে করে ৭২ দশমিক ৫ কুইন্টালের বেশি রেশন পাঠানো হয়েছে। অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বরের রেশন এখনো পাঠানো যায়নি,” বলেন ম্যাজিস্ট্রেট আর কে পান্ডে।

গ্রামগুলোতে পৌঁছানোর একমাত্র সড়কটির সংস্কার কাজ চলায় প্রশাসনকে রেশন পাঠাতে হেলিকপ্টারের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে, বলেন তিনি। সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার ব্যবহারের জন্য তাদের সঙ্গে যোগাযোগও রাখা হচ্ছে।

শীতকালে সাধারণত ভায়াস ভ্যালির গ্রামবাসীরা নিম্নভূমিতে নেমে আসে, সড়কের বাজে অবস্থার কারণে এবার তাতেও দেরি হচ্ছে, জানান পান্ডে।

কৈলাস সরোবর দেখতে আসা পর্যটকদের সঙ্গে তাদের হেলিকপ্টারে করে রেশন পাঠানো যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখতে সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটকেও গ্রামবাসীরা অনুরোধ জানিয়েছেন।

যদিও তীর্থযাত্রার সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় গত মাসের পর থেকে ওই হেলিকপ্টার পরিবহন সেবাও বন্ধ আছে।