শুক্রবার দেশটির সর্বোচ্চ আদালত এক রায়ে মন্দিরে ঢুকতে নারীদের বয়সের সীমারেখা তুলে দেয় বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
“শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশের ক্ষেত্রে নারীদের ওপর দেওয়া বিধিনিষেধ জরুরি ধর্মীয় রীতি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না,” বলে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ।
বেঞ্চের চার বিচারক শবরীমালা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পক্ষে মত দেন, জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম। একমাত্র নারী বিচারক ইন্দু মালহোত্রার মত ছিল ভিন্ন।
তিনি বলেন, দেশে ধর্মনিরপেক্ষ পরিবেশ বজায় রাখার জন্যই গভীর ধর্মীয় চিন্তাচেতনা যুক্ত এ ধরনের বিষয় বদলানো উচিত নয়।
সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ‘সতী’র মতো এমন ব্যতিক্রমী চর্চা ছাড়া কি কি ধর্মীয় রীতি উঠিয়ে দেওয়া উচিত, তা ঠিক করা আদালতের এখতিয়ার নয় বলেও মত এ নারী বিচারকের।
“ধারা ২৫-এ দেওয়া উপাসনার মৌলিক অধিকার লংঘন করতে পারে না সমতার মতবাদ। ধর্মীয় বিষয়ের ক্ষেত্রে যুক্তিসঙ্গত ধারণা নিয়ে আসা যায় না,” বলেন তিনি।
শবরীমালা মন্দিরের মামলাটি ছোট জায়গার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, দেশের অন্যান্য স্থান ও মন্দিরেও এর প্রভাব পড়বে বলে মন্তব্য তার।
১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারীদের মন্দিরের মূল দেবতা লর্ড আয়াপ্পার সামনে আসার ক্ষেত্রে শতকের পর শতক ধরে নিষেধাজ্ঞা ছিল শবরীমালায়।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারপতি মিশ্র বলেন, ভক্তি কখনও বৈষম্যের উপর ভিত্তি করে গঠিত হতে পারে না। উপাসনার অধিকার সাংবিধানিক। ধর্মীয় রীতি নারীকে সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারে না।
“দেবতা আয়াপ্পা আলাদা নন। সব নারী পুরুষেরই ধর্ম পালনের অধিকার আছে,” বলেন তিনি।
দেবতা আয়াপ্পার এ শবরীমালা মন্দির ৮০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পরিচালনাকারী ত্রাভাঙ্কুর দেবসোম বোর্ড শুনানির সময় মন্দিরে প্রবেশে নারীদের বয়স নির্ধারণের বিষয়টি ‘নারীবিরোধী’ নয় বলে মন্তব্য করে। নারীরাই ‘স্বেচ্ছায় এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন’ বলেও দাবি করেছিল তারা।
এ যুক্তি প্রত্যাখ্যান করে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। বলে, ঐচ্ছিক কিংবা ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী নারীদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার বিষয়টি সংবিধানের মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
জুলাইয়ে কেরালার বাম সরকারও শবরীমালা মন্দিরে নারীদের প্রবেশের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ উঠিয়ে দেওয়ার পক্ষে তাদের অবস্থানের কথা সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিল।