কেরালায় বন্যা-ভূমিধসে মৃত্যুর মিছিল

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালায় টানা বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে গত নয় দিনে ৩২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 August 2018, 04:58 AM
Updated : 17 August 2018, 05:50 PM

শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ান মৃতের এ সংখ্যা নিশ্চিত করেন।

মুষলধারে হওয়া এ বৃষ্টি শনিবারের আগে থামবে না বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এরই মধ্যে রাজ্যটির প্রায় দেড়লাখ বাসিন্দা গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। জলাবদ্ধ ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার অধিবাসীদের সরিয়ে নিতে উদ্ধারকর্মীরা জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এক টুইটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার সন্ধ্যায় বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে কেরালা যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।

টানা বৃষ্টিতে পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন বাঁধ খুলে দিতে বাধ্য হলে কেরালার অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়।

প্রায় এক শতকের মধ্যে কেরালায় এটি সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

ভূমিধসের কারণে সৃষ্ট ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য কর্তৃপক্ষ।

আরও বৃষ্টি এবং বন্যা-ভূমিধসের আশঙ্কার দক্ষিণের এ রাজ্যটির ১৪টি জেলার ১৩টিতেই সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জনসাধারণকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে পিনারাই বিজয়নের সরকার।

রাজ্যের সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে; অনেক জেলাতেই পর্যটকপ্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বন্যায় আটকে পড়াদের উদ্ধারে হেলিকপ্টার, লাইফবোটের পাশাপাশি বিভিন্ন বাহিনীর হাজারও সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

“আমরা এমন কিছু প্রত্যক্ষ করছি, কেরালার ইতিহাসে আগে যা কখনোই দেখা যায়নি। প্রায় সব বাঁধ খুলে দেওয়া হয়েছে। যেসব প্ল্যান্টের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হতো তার বেশিরভাগই তলিয়ে গেছে। মটর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে,” বলেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ান।

ছবি: রয়টার্স

কেরালার বাণিজ্যিক রাজধানী কোচির অনেক এলাকা ডুবে যাওয়ায় সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। বন্যার পানিতে রানওয়ে ডুবে যাওয়ায় কোচি বিমানবন্দরের সব কার্যক্রম ২৬ অগাস্ট পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

দুর্যোগ কবলিত ত্রিচুর, আলুভা ও মুভাত্তুপুঝায় আটকে পড়া মানুষদের হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে ভারতের সশস্ত্রবাহিনী। ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযানে নতুন করে সামরিক বাহিনীর তিনটি উইংকে নামানো হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনীর (এনডিআরএফ) ১২টি দল আগে থেকেই মোতায়েন আছে।

কেরালার মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া এক সতর্কবার্তায় পেরিয়ার ও চালাকুদি নদীর পানি বাড়তে পারে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে আলুভার অবস্থাই সবচেয়ে বাজে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। দক্ষিণের ইডুক্কি ও উত্তরের মালাপ্পুরাম ও কান্নুরে নতুন করে ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে।

সরকারি যানবাহন ছাড়া অন্য কোনো গাড়িকে পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের স্থান মুন্নারে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। পম্পা নদীর পানির মাত্রা বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় সাবারিমালার পাহাড়ি মন্দিরের দিকে যেতেও জনসাধারণকে নিষেধ করা হয়েছে।