সরকারি একটি হাসপাতালের এক চিকিৎসক একথা জানিয়েছেন। আহতদেরকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে বিবিসি তামিলকে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে চেন্নাইয়ের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তামিল রাজনীতির কিংবদন্তী নেতা করুণানিধি।
বুধবার চেন্নাইয়ে করুণানিধির শেষকৃত্যে তাকে শেষবারের মত শ্রদ্ধা জানাতে আসা ডিএমকে দলীয় সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের ঢল নামে। কিন্তু শেষকৃত্যস্থলে জায়গার তুলনায় জনসমাগম কয়েকগুণ বেশি হওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
করুণানিধির দেহ শায়িত রাখা হয়েছিল রাজাজি হলে। সেখানে পুলিশ একটি নির্দিষ্ট পথ দিয়ে মানুষজনকে ভেতরে ঢোকাচ্ছিল।
কিন্তু হলের প্রবেশপথে হঠাৎ করেই ভিড় বেড়ে গেলে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে যায়। এসময় সবাই হুড়মুড়িয়ে হলের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পদপিষ্ট হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালে এক নারী ও পুরুষের মৃতদেহ আনা হয় বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন রাজীব গান্ধী জেনারেল হাসপাতালের এক কর্মকর্তা। আহত ৪৭ জনকেও হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
রাজাজি হল থেকে করুণানিধির মরদেহ মেরিনা বিচের আন্না চত্বরে নিয়ে সেখানেই তাকে সমাহিত করার কথা রয়েছে।
রাজাজি হলে করুনানিধি যতক্ষণ শায়িত ছিলেন ততক্ষণই জনারণ্য হয়েছিল এলাকাটি। পরে হল থেকে আন্না চত্বর পর্যন্ত গোটা রাস্তা এবং মেরিনা সৈকতও জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।
এর আগে করুণানিধির শেষকৃত্য কোথায় অনুষ্ঠিত হবে তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে তা আদালতে গড়িয়েছিল।
রাজ্য সরকার করুনানিধিকে মেরিনা বিচে সমাহিত করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছিল, কেবল দায়িত্বে থাকা মুখ্যমন্ত্রীরাই মারা গেলে এই স্থানে সমাহিত করা হয়।
পরে মাদ্রাজ হাইকোর্ট এ যুক্তি খারিজ করে মেরিনা বিচেই করুণানিধিকে সমাহিত করার পক্ষে রায় দেয়। করুণানিধির দুই বড় রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী এমজি রামচন্দ্র এবং জে জয়ললিতা দুইজনেরই সমাধি রয়েছে সেখানে।
২০১৬ সালে জয়ললিতার মৃত্যুর পর তামিল রাজনীতির শেষ কিংবদন্তি হিসেবে টিকে ছিলেন করুণানিধি। শুধু তামিল রাজনীতিই নয় বরং গোটা দেশেরই উল্লেখযোগ্য রাজনীতিবিদদের মধ্যে সবচেয়ে প্রবীণ তিনজনের একজন ছিলেন করুণানিধি।
১৯৪৯ সালে দ্রাবিড় মুনেত্রা কাজাগাম (ডিএমকে) পার্টির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন তিনি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি দলটির নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন।
১৯৫৭ সালে তিনি প্রথম তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নেন। ছয় দশকের রাজনৈতিক জীবনে করুণানিধি পাঁচবার মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া, তিনি চলচ্চিত্রের স্ক্রিপ্ট লেখার পাশাপাশি একাধারে গল্প, নাটক ও কবিতাও লিখেছেন। সাহিত্য ও চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তাকে তামিল ভাষায় কালাইঙ্গার (শিল্পী) নামে ডাকা হয়।