চেন্নাইয়ে অভিজাত অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে শিশু ধর্ষণ, ১৭ কর্মী গ্রেপ্তার

ভারতের চেন্নাইয়ের একটি অভিজাত অ্যাপর্টমেন্ট কমপ্লেক্সের ১৭ কর্মী মিলে ১১ বছরের এক শিশুকে কয়েক সপ্তাহ ধরে ধর্ষণ করেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2018, 12:57 PM
Updated : 18 July 2018, 12:59 PM

ভয়াবহ এ ঘটনা কমপ্লেক্সের বাসিন্দাদের আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলেছে।

সেখাকার বাসিন্দা এক নারী বলেন, “তারা সবসময় হাসিমুখে কথা বলত, স্যালুট করত এবং আমরা তাদের বিশ্বাস করতাম। মেরামতের মিস্ত্রিরা অবাধে আমাদের ঘরের ভেতর প্রবেশ করতো। এ ঘটনার পর আমরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। তারা যে কোনো সময় আমাদের শেষ করে ফেলতে পারে। আগে আমরা বাইরে ওঁত পেতে থাকা বিপদ নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম, এখন ঘরের ভেতরেও বিপদ।”

এ ঘটনার পর তিনি আশেপাশে লোকজন না থাকলে কমপ্লেক্সের সুইমিং পুল বা জিমে যাবেন না বলে জানান।

“সব জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে হবে এবং সেগুলো যেন কার্যকর থাকে তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।”

মাদ্রাস হাইকোর্ট শিশুটিকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির (সিডব্লিউসি) কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছে। সেইসঙ্গে আদালত চেন্নাই পুলিশের কাছে আগেই শিশুটিকে সিডব্লিউসি’র কাছে প্রেরণ না করার কারণ জানতে চেয়েছে।

ভারতের আইন অনুযায়ী, পুলিশের প্রতিবেদনে যদি কোনো শিশুর বিশেষ যত্নের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ থাকে তবে তাকে সিডব্লিউসি কমিটির কাছে পাঠাতে হবে। শিশুটি তার পরিবারের হেফাজতে নাকি শিশু আশ্রয় কেন্দ্রে থাকবে সে বিষয়ে ওই কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।

ধর্ষণের শিকার শিশুটি পরিবারের সঙ্গে ওই অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে বসবাস করত। তার শ্রবণজনিত সমস্যা আছে।

ঘুমের ওষুধ মেশান পানীয় খাইয়ে নিরাপত্তারক্ষী, লিফ্ট অপারেটর, ইলেক্ট্রিশিয়ান ও প্লাম্বারসহ মোট ১৭ জন কয়েক সপ্তাহ ধরে শিশুটিকে ধর্ষণ করে বলে আদালতে জানান শিশু অধিকারকর্মীরা।

পুলিশের অভিযোগপত্রে বলা হয়, ৬৬ বছর বয়সী লিফ্ট অপারেটর প্রথম শিশুটিকে ধর্ষণ করে।  তারপর সে অন্যদের একই কাজ করতে উৎসাহ দেয় এবং ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও করে।

তারা শিশুটিকে কমপ্লেক্সের বেজমেন্ট, ছাদ, জিম, দর্শণার্থীদের বসার কক্ষসহ অনেক জায়গায় নিয়ে ধর্ষণ করে।

তবে তারা সব সময়ই সিসিটিভি’র আড়ালে থাকতে সক্ষম হয়। যদিও কমপ্লেক্সটির বেশির ভাগ সিসিটিভি ক্যামেরাই বিকল বলে জানায় পুলিশ।

এক পর্যায়ে শিশুটি তার বড় বোনের কাছে ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনা খুলে বললে বিষয়টি জানাজানি হয়।

গত রোববার শিশুটির বাবা-মা পুলিশের কাছে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করে। পরদিন ওই ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযুক্তদের আদালতে নেওয়ার সময় আইনজীবী ও সেখানে উপস্থিত জনতা তাদের ওপর হামলার চেষ্টা করে।

কোনো আইনজীবী অভিযুক্তদের পক্ষে আইনি লড়াইয়ে নামতে রাজি হয়নি বলে জানায় এনডিটিভি।