ভারতে নির্ভয়ার ধর্ষকদের ফাঁসির রায় বহাল

দিল্লিতে চলন্ত বাসে এক প্যারামেডিকেল ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় চারজনের ফাঁসির রায় বহাল রেখেছে ভারতে সুপ্রিম কোর্ট।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 July 2018, 09:45 AM
Updated : 18 Dec 2019, 11:02 AM

এ মামলায় হাই কোর্টে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চারজনের মধ্যে তিনজন সর্বোচ্চ আদালতে যে রিভিউ আবেদন করেছিলেন, সোমবার তা খারিজ করে দিয়েছে আপিল বিভাগ।

এনডিটিভি জানায়, প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারকের বেঞ্চ আসামি মুকেশ, পবন  গুপ্ত ও বিনয় শর্মার (২৩) রিভিউ আবেদন খারিজ করে এ রায় দেয়।

আর সর্বোচ্চ সাজায় দণ্ডিত অপর আসামি অক্ষয় কুমার সিংহ সাজা কমানোর আবেদন না করায় তার ক্ষেত্রেও ফাঁসির রায় বহাল থাকছে।

২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে সিনেমা দেখে বন্ধুর সঙ্গে ফেরার সময় চলন্ত বাসে ধর্ষণের শিকার হন ওই প্যারামেডিকেল ছাত্রী।

ছয় পাষণ্ড ধর্ষণের আগে তার বন্ধুকে পিটিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখে। পরে তাদের দুজনকেই চলন্ত বাস থেকে ফেলা দেওয়া হয়।

এর দুই সপ্তাহ পর মারাত্মক আহত ওই ছাত্রী সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

ওই ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ভারতজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ছাত্র-জনতা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মেয়েটির নাম দেয় ‘নির্ভয়া’।

বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে নারীর সুরক্ষা নিয়ে জাতীয় পর্যায়েও বিতর্ক তৈরি হয়। প্রবল বিতর্কের মুখে আইন সংশোধন করে নারী নির্যাতনের জন্য করা হয় সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান।

মামলায় অভিযুক্ত ছয়জনের মধ্যে প্রধান আসামি বাসচালক রাম সিং কারাগারে মারা যান। পরে তার নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়।

দোষী সাব্যস্ত আরেক অপরাধী সে সময় অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় কিশোর অপরাধীদের জন্য প্রযোজ্য আইনে ২০১৫ সালে তাকে তিন বছরের জন্য সংশোধনাগারে পাঠায় আদালত। আইন অনুযায়ী সেটাই ছিল অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সর্বোচ্চ সাজা।

শাস্তির মেয়াদ কাটিয়ে ২০১৫ সালে সেই তরুণ মুক্তি পেলে নতুন করে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরপর ধর্ষণের মত গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সীদেরও ‘প্রাপ্তবয়স্ক’ বিবেচনা করে বিচারের আইন হয় ভারতে।

ভারতের একটি দ্রুত বিচার আদালত ২০১৩ সালে বাকি চার আসামির ফাঁসির রায় দেয়। ২০১৪ সালে হাই কোর্ট এবং গতবছর আপিল ওই সাজাই বহাল রাখে। 

এরপর তিন আসামি শাস্তি কমানোর জন্য রিভিউ আবেদন করেন। গত বছর নভেম্বরে তাদের আবেদন শুনতে রাজি হয় শীর্ষ আদালত।

সেই শুনানির জন্য সাজা কার্যকরের প্রক্রিয়া এতদিন স্থগিত থাকলেও রিভিউ খারিজ হওয়ায় এখন দণ্ড কার্যকরের পথ খুলল।

নির্ভয়ার বাবা-মা ধর্ষকদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায়কে তারা স্বাগত জানিয়েছেন।