রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে উত্তর প্রদেশের হাপুর এলাকায় একদল উন্মত্ত জনতার আক্রমণে ৪৫ বছর বয়সী কাসিম মারা গেছেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
হামলায় গুরুতর আহত ৬৫ বছর বয়সী সামায়ুদ্দিনকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, সাইকেল আরোহী কাসিম ও সামায়ুদ্দিনের সঙ্গে কথা কাটাকাটির সূত্র ধরে গ্রামবাসীরা তাদের ওপর চড়াও হলে এ নির্মম ঘটনাটি ঘটে।
হামলার সঙ্গে গরু চোরাচালানি গুজবের সংশ্লিষ্টতা ছিল বলে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন হতাহত ও আটক ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা।
কাসিম ও সামায়ুদ্দিনকে পিটুনি দেওয়ার পরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেলে পরিবারগুলোর দাবি আরও জোরালো হয়।
মিনিটখানেক দীর্ঘ ওই ভিডিওতে ছিন্নভিন্ন পোশাকের কাসিমকে একটি মাঠের ওপর শুয়ে পড়তে দেখা গেছে। তীব্র ব্যথায় তার কাতরানোর সময় এক ব্যক্তিকে হামলাকারীদের সরে যেতে ও কাসিমকে সামান্য পানি দিতে বলতেও শোনা গেছে।
“তোমরা তাকে মেরেছ, আঘাত করেছ, অনেক হয়েছে, এর পরের পরিণতিগুলো বোঝার চেষ্টা কর,” ওই ব্যক্তিকে এমনটাও বলতে শোনা যায়।
এর মধ্যেই অন্য একটি কণ্ঠ তাকে থামিয়ে দিয়ে বলে, “আমরা যদি দুই মিনিটের মধ্যে না আসতাম, তা হলে গরুটি জবাই হয়ে যেত।”
“ও একটা কসাই, কেউ কি জিজ্ঞেস করবে, কেন সে একটি বাছুরকে জবাই করার চেষ্টা করেছিল,” ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে তৃতীয় আরেকজনকে এমনটাই বলতে শোনা যায়।
ভিডিওতে কাসিমকে মাটিতে শুয়ে পড়তে দেখার পাশাপাশি তাকে পানি দিতে উন্মত্ত জনতার অস্বীকৃতিও শোনা যায়।
পুলিশ বলছে, সামায়ুদ্দিনের পরিবার যে অভিযোগ করেছে তাতে গরু জবাই সংক্রান্ত বিষয়ের উল্লেখ নেই।
জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা পরন কুমার বলেন,“মোটর সাইকেলে করে বাঝেদা গ্রাম অতিক্রম করছিলেন দুই ব্যক্তি। পথের মধ্যেই স্থানীয়দের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়; এরপরই তাদের ওপর হামলা হয়, যাতে এক ব্যক্তি মারা যান। অভিযোগ জানানো পরিবারটি বলছে, দুই আরোহীকে বহনকারী মোটরসাইকেলটির সঙ্গে অন্য একটি মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হওয়ার পর ওই বাকবিতণ্ডা শুরু হয়েছিল।”
উত্তর প্রদেশের পুলিশ এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের ও হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
“গরু জবাইয়ের গুজবের কথাও শোনা যাচ্ছে সেখানে, আমরা সেই দিক থেকেও মামলাটির তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি,” বলেন হাপুরের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা সঙ্কল্প শর্মা।