রোহিঙ্গা হত্যায় মিয়ানমারের ৭ সৈন্যের কারাদণ্ড

নিরস্ত্র রোহিঙ্গাদের হত্যার দায়ে মিয়ানমারের সাত সৈন্যকে ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 April 2018, 07:25 PM
Updated : 10 April 2018, 07:25 PM

মিয়ানমার সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে এই দণ্ডের কথা জানায় বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

গত সেপ্টেম্বরে রাখাইন প্রদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ১০ রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যার দায়ে দণ্ড হল এই সেনাদের।

সামরিক আদালতে দণ্ডিত এই সৈন্যদের ১০ বছর কারাগারে থাকার পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চলে কঠোর শ্রমের কাজেও নিযুক্ত থাকতে হবে বলে মিয়ানমারের সেনা প্রধান মিন অং  হ্লাইংয়ের ফেইসবুক পাতায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়।

গত ১৮ ডিসেম্বর রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিতভি থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার উত্তরে উপকূলীয় গ্রাম ইন দিনে গণকবরে ১০ জন রোহিঙ্গার মৃতদেহ পাওয়া যায়।

তারা যে গণহত্যার শিকার হয়েছিলেন, তা তুলে আনেন রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ওয়া লোন এবং  কিয়াও সোয়ে। রাষ্ট্রের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগে পরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়, এখনও তারা বন্দি রয়েছেন।

গত বছরের ২৪ অগাস্ট রাতে একযোগে মিয়ানমার পুলিশের ৩০টি তল্লাশি চৌকি ও একটি সেনা ক্যাম্পে হামলার পর ব্যাপক অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। সেখানে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মুখে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গারা।

রাখাইনে জ্বলছিল রোহিঙ্গাদের গ্রাম: ছবি-রয়টার্স

ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে বর্ণনা করে আসছে জাতিসংঘ। অভিযানে এক মাসেই ৬ হাজার ৭০০ মানুষকে হত্যা করা হয় বলে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মেদসঁ সঁ ফ্রঁতিয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। শত শত রোহিঙ্গা গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার প্রমাণ উঠে এসেছে স্যাটেলাইট চিত্রে।

সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নারীরা। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ভাষ্যে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের জাতিগতভাবে নির্মূল করতে যে অভিযান চালায়, তার গুরুত্বপূর্ণ ও ভয়াবহ একটি অংশ ব্যাপক হারে ধর্ষণ।

রোহিঙ্গাদের ওপর এই নিষ্ঠুরতা নিয়ে বিশ্বব্যাপী সমালোচনা-প্রতিবাদের মধ্যে নভেম্বরের মাঝামাঝিতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের সৈন্যরা নৃশসংশতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের কিছুই করেনি।

রয়টার্সের অনুসন্ধানে হত্যার চিত্র বেরিয়ে আসার পর সেনাবাহিনী বলে, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ওই ১০ জনকে হত্যা করেছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে এবং এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।