এখনও মিয়ানমারকে সমর্থন করছে চীন

রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বিশ্বজুড়ে মিয়ানমারের সমালোচনা চললেও চীন এখনও সেদেশের সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে বলে দেশটির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2017, 03:50 PM
Updated : 21 Oct 2017, 06:28 PM

চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগের উপ-প্রধান গোয়া ইয়েঝা শনিবার এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

বেইজিংয়ে কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলনের ফাঁকে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, চীন রাখাইনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার নিন্দা জানায় এবং সেখানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় মিয়ানমারের পদক্ষেপকে সমর্থন করে।  

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির এই নেতা বলেন, চীন ও মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ ও দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে এবং মিয়ানমার নিজেই তার সমস্যা মোকাবেলা করতে পারে বলে চীন বিশ্বাস করে।

ফাইল ছবি

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে চীনের অবস্থান পশ্চিমাদের থেকে ভিন্ন হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, চীন যে কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার বিপক্ষে।

“কোনো দেশে অন্য কোনো দেশ হস্তক্ষেপ করলে তার কী পরিণতি হয় সাম্প্রতিক বিষয়গুলোতে আপনি দেখতে পাচ্ছেন। আমরা এটা করব না।”

চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের দীর্ঘ স্থল সীমান্ত থাকায় তারা সেদেশে অস্থিতিশীলতা চান না বলে জানান গোয়া ইয়েঝা।

“আমরা সহিংস ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাই,” বলেন তিনি।

মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির সঙ্গে চীনের যোগাযোগের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখে কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগ। কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে ২০১৫ সালে চীন সফর করেন সু চি।

গোয়া ইয়েজার বিভাগের প্রধান সং তাও গত অগাস্টে মিয়ানমার সফর করেন; সে সময় সু চির সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি।

গত ২৪ অগাস্ট রাখাইনে মিয়ানমারের ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ঘাঁটিতে বিদ্রোহীদের হামলার পর সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দমন অভিযান শুরু হয়।

সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে এরইমধ্যে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বলেছেন, রাখাইনে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে নির্বিচারে মানুষ হত্যার পাশাপাশি বাড়ি-ঘরে আগুন ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

রোহিঙ্গাদের ওপর এই অভিযানকে ‘জাতিগত নিধনের’ চেষ্টা বলছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশ নির্যাতন বন্ধে কয়েক দফা আহ্বান জানালেও তাতে সাড়া দেয়নি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।

এই প্রেক্ষাপটে গত সপ্তাহে মিয়ানমারের সেনা প্রধানসহ শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের সব ধরনের আমন্ত্রণ স্থগিত করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধে চাপ প্রয়োগের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের জেনারেলদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে বিবেচনা করছে বলেও কূটনীতিকরা জানিয়েছেন।