রাখাইনে বর্বরতা: মিয়ানমার বাহিনীতে তদন্ত শুরু

রাখাইনে রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে হত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মধ্যে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।   

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2017, 01:06 PM
Updated : 13 Oct 2017, 01:57 PM

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৫ অগাস্ট থেকে পরিচালিত ওই অভিযানে সেনা সদস্যরা কোথাও নিয়ম ভেঙেছে কি না, তা খতিয়ে দেখবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আয় উইনের নেতৃত্বে গঠিত এই তদন্ত কমিটি।

মিয়ানমারের সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের ফেইসবুক পেইজে শুক্রবার ওই তদন্তের তথ্য প্রকাশ করা হয়। তবে তিনি এটাও বলেছেন, বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের সংবিধান অনুযায়ী সেনাবাহিনীর ওই অভিযান ছিল বৈধ।

সেনাবাহিনী ওই অভিযান শুরুর পর গত দেড় মাসে পাঁচ লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি হত্যা, লুটপাটের অভিযোগ এসেছে তাদের কথায়।

২৪ অগাস্ট রাতে রাখাইনের ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ক্যাম্পে সমন্বিত হামলার পর সেনাবাহিনী ওই অভিযান শুরু করে। ওই হামলার জন্য রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের একটি দলকে দায়ী করে আসছে মিয়ানমার সরকার।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সরকার ওই অভিযানকে ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই’ বললেও জাতিসংঘ একে চিহ্নিত করেছে রোহিঙ্গাদের ‘জাতিগতভাবে নির্মূলের চেষ্টা’ হিসেবে।

ওই অভিযানের বিষয়ে তদন্তকারীরা যেসব প্রশ্ন করবে তাও মিয়ানমার সেনাপ্রধানের ফেইসবুকে দেওয়া বিবৃতিতে তুলে ধরা হয়েছে।

“তারা কি সামরিক আচরণবিধি অনুসরণ করেছিল? অভিযানের সময় তারা কি ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিল? তার পর (কমিটি) বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করবে।”

২০১৬ সালের অক্টোবরে সেনাবাহিনীর পাল্টা দমন অভিযানের পর নির্যাতনের অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া জাতিসংঘের একটি প্রতিনিধি দলকে ঢুকতে দিচ্ছে না মিয়ানমার।

তবে নিরাপত্তা বাহিনীর তথাকথিত ‘নির্মূল অভিযানে’ নির্যাতনের যে অভিযোগ শরণার্থীরা এনেছেন বিগত সেনা তদন্তসহ অভ্যন্তরীণ তদন্তগুলো সেসব অভিযোগ জোর গলায় খারিজ করে দিয়েছে।

মিয়ানমারের নেতা অং সান সু চি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জবাবদিহি করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি প্রমাণসাপেক্ষে রাখাইনের বাসিন্দা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত নেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন।

যদিও মিয়ানমারের প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর প্রধান গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত স্কট মারসিয়েলের সঙ্গে বৈঠকে রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে সঠিক তথ্য আসছে না দাবি করে বলেন, বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া ‘বাঙালির’ সংখ্যা নিয়ে অতিরঞ্জন করা হচ্ছে।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবারও মিয়ানমার সেনাপ্রধান জাপানি রাষ্ট্রদূতের কাছে ‘জাতিগত নির্মূলের’ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ছবিতে দেখা যায় মুসলিমরা “সন্ত্রস্ত হয়ে পালাচ্ছে না, বরং শান্তিপূর্ণভাবে চলে যাচ্ছে।”