অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় সেনাকে পুলিশ বলছে ‘বাংলাদেশি অভিবাসী’

তিন দশক ধরে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চাকরি শেষে অবসরে যাওয়ার পর এক সৈনিকের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী’ হওয়ার অভিযোগ তুলে মামলা করেছে আসাম রাজ্যের পুলিশ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Oct 2017, 08:10 AM
Updated : 1 Oct 2017, 10:48 AM

আগামী ১৩ অক্টোবর বিদেশিদের জন্য গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলাটির শুনানি হবে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে।

মোহাম্মদ আজমল হক নামে ওই ব্যক্তি আসামের রাজধানী গুয়াহাটি থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ছায়াগাঁওয়ের বাসিন্দা। জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার হিসেবে গত বছর অবসরে যান তিনি।

আজমল এনডিটিভিকে বলেন, “আমি খুবই দুঃখ পেয়েছি; অনেক কেঁদেছি। আমার বুকটা খান খান হয়ে গেছে… ৩০ বছরের সার্ভিসের পরও আমাকে আজ এই অপমান সইতে হচ্ছে।

“আমি যদি অবৈধ বাংলাদেশিই হই, তাহলে এত বছর সেনাবাহিনীতে থাকলাম কিভাবে?”

তিনি বলেন, কেউ সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার সময় পুলিশি যাচাই বাধ্যতামূলক। তার ক্ষেত্রেও এই যাচাই করেছিল পুলিশ।

 

আসামে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটছে বলে অভিযোগ করেন কেউ কেউ। স্পর্শকাতর এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের রাজনীতিতে বিতর্ক রয়েছে। গত বছর ক্ষমতায় আসার আগে ২৬২ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত কাঁটাতারে ঘিরে অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি।

তবে অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে অভিযানের নামে ভারতীয় নাগরিকদের হয়রানির কতগুলি ঘটনাও ঘটেছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

আজমল জানান, ২০১২ সালে তার স্ত্রী মুমতাজ বেগমকেও একই অভিযোগের মুখে পড়তে হয়েছিল। ওই দম্পতিকে তাদের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হয়েছিল।

তিনি বলেন, “ওই সময় আমরা ট্রাইব্যুনালের সামনে সব কাগজপত্র উপস্থাপন করেছিলাম… তারা তাকে (স্ত্রী) প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক ঘোষণা দিয়েছিল।”

 

এদিকে অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকের বিরুদ্ধে অবৈধ অভিবাসী হওয়ার অভিযোগের এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

একটি টুইটে একজন লিখেছেন, এটা আসাম পুলিশের অত্যন্ত নির্লজ্জ কাজ। তার কীভাবে একজন অবসরপ্রাপ্ত একজন দেশপ্রেমিক ভারতীয় সেনার সঙ্গে এই আচরণ করতে পারল। সাধারণ মানুষ কী দুর্দশায় আছে তা সহজেই কল্পনা করা যায়।

এবিষয়ে আসাম পুলিশের কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।