গুলশান হামলার অস্ত্র তৈরি পশ্চিমবঙ্গে: এনআইএ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বসে পাকিস্তানিদের প্রশিক্ষণে বাংলাদেশের গুলশানের ক‌্যাফেতে বিদেশিদের উপর হামলার জন‌্য অস্ত্র তৈরি করা হয়েছিল বলে তথ‌্য মিলেছে।

ভারত প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Oct 2016, 05:22 AM
Updated : 29 Oct 2016, 12:04 PM

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদে এই তথ‌্য পাওয়ার পর তা যাচাই করা হচ্ছে বলে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

তারা বলছেন, গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকারীরা যে একে-২২ রাইফেল নিয়ে হানা দিয়েছিল, তা পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলায় বসে তৈরি করা হয় বলে জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে।

গুলশানে হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ১৯ জনকে হামলার কাজটি ‘নব‌্য জেএমবি’র বলে বাংলাদেশের পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন।

হামলাকারীদের অস্ত্র ভারত হয়ে বাংলাদেশে এসেছিল বলে বাংলাদেশ পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম ইতোপূর্বে জানালেও এগুলো কোথায় তৈরি তা নিশ্চিত করতে পারেননি।

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে জেএমবির ছয় সদস‌্যকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাদের একজন বাংলাদেশের ত্রিশালে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ‘হোতা’ আনোয়ার হোসেন ফারুক বলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার একজনের দেওয়া তথ‌্যেই গুলশান হামলার অস্ত্র কারখানার হদিস মিলছে বলে এনআইএ কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সে (জেএমবি সদস‌্য) বলেছে, বিহারের মুঙ্গের থেকে কারিগররা এসেছিল, মালদায় একটি আস্তানায় বসে অস্ত্র বানায় তারা।

“তবে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল পাকিস্তানের কয়েকজন। তারা সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাষায় কথা বলছিল।”

এনআইএ কর্মকর্তারা মনে করছে, ওই প্রশিক্ষকরা পশতু ভাষায় কথা বলছিল, তারা এসেছিল পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের দারা আদম খেল থেকে।

আফগান সীমান্তবর্তী পাকিস্তানের ওই এলাকাটি সমরাস্ত্র তৈরির জন‌্য সুপরিচিত। ওই এলাকার কারিগররা অল্প সময়েই যে কোনো আগ্নেয়াস্ত্রের নকল তৈরি করতে পারেন, ওই এলাকায় বাজারে প্রকাশ‌্যেই অস্ত্র কেনা-বেচা হয়।

অন‌্যদিকে ভারতের বিহারের মুঙ্গের ছোট ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির জন‌্য পরিচিত। সেখানে পিস্তল জাতীয় অস্ত্র তৈরি হলেও একে-২২ রাইফেলের মতো অস্ত্র সাধারণ তৈরি হয় না।

এ থেকে ভারতের গোয়েন্দারা বলছেন, সেক্ষেত্রে পাকিস্তানিরাই একে-২২ রাইফেল তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। আর এতে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার যোগসাজশও থাকতে পারে।

পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার ওই জেএমবি সদস‌্য জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, মালদায় তৈরি করা পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত হয়ে অস্ত্রগুলো বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল।

গুলশানে কমান্ডো অভিযানে জঙ্গিরা মারা পড়ার পর একটি ফোল্ডেট বাট একে-২২ রাইফেল এবং চারটি পিস্তল উদ্ধারের কথা জানানো হয়।

একে-২২ রাইফেল সহজে চালানোর মতো একটি অস্ত্র। এটি প্রথমে তৈরি হয়েছিল রুমানিয়ায়। তবে এই অস্ত্রটি একে-৪৭ রাইফেলের মতো জনপ্রিয়তা পায়নি।