সহযোদ্ধাদের মৃত্যুতেও অটুট ছিল জামশেদ আলীর মনোবল

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Dec 2016, 07:13 PM
Updated : 31 Dec 2016, 11:30 AM

মো: জামশেদ আলী মিয়া ১১ নাম্বার সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর আহবানে সারা দেশে সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। পাকুন্দিয়া থানাও তার ব্যতিক্রম ছিল না। পাকুন্দিয়া থানার (বর্তমানে উপজেলা) সংগ্রাম পরিষদের গর্বিত সদস্য ছিলেন মো: জামশেদ আলী মিয়া। যুদ্ধ শুরু হলে তিনি নিজেকে ঘরে আবদ্ধ রাখতে পারেন নি।

একদিন বাড়ি ছেড়ে বেড়িয়ে ভারতের দিকে যাত্রা শুরু করলেন জামশেদ আলী। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার সিএমবি রোড হয়ে সীমান্ত নদীর দিকে যাত্রা করেন তিনি। কিন্তু ওই নদী তখন পাকবাহিনীর দখলে ছিল। নৌকা দেখামাত্র পাকবাহিনী ব্রাশফায়ার করেছিল। ফলে মো: জামশেদ আলীসহ অন্যরা ফেরত আসতে বাধ্য হয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি অনেক চেষ্টার পর মহাদেবপুর ক্যাম্পে পৌছাতে সক্ষম হন। এরপর তুরাগে তারা প্রশিক্ষণ নেন। ট্রেনিং শেষে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিতে তারা বাংলাদেশে পুনরায় প্রবেশ করেন। প্রবেশ পথে পূর্ববাহিনীর যুদ্ধে তারা সহযোগিতা করেন। এই যুদ্ধে একজন পাকিস্তানি সৈন্য জীবিত ধরা পড়ে এবং দুটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। 

এরপর কিশোরগঞ্জের কসরা ইউনিয়নে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় মুক্তিযোদ্ধারা। কিন্তু সেখানে জামশেদ আলী মিয়ার প্রায় ৯ জন সহযোদ্ধা শাহাদাত বরণ করেন। ফলে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটতে বাধ্য হন। এরপরও দমে যান নি জামশেদ আলী। পরবর্তীতে নিজ এলাকায় ফিরে নতুন একটি গ্রুপের সাথে যোগ দিয়েছিলেন। আবারও ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন যুদ্ধে। তখন তাদের কমান্ডার ছিলেন সাইদুর রহমান রতন। এভাবে দেশ স্বাধীন করার জন্য নিজের জীবনকে বাজি রেখে বারবার পাকবাহিনীর মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি।

নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে মো: জামশেদ আলী মিয়া বলেন, ‘সবাইকে যুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে। আমাদের ত্যাগের ইতিহাস, বীরত্বের ইতিহাস জানতে হবে। সবাই মিলে কাঁধে কাধ মিলিয়ে দেশকে গড়ে তুলতে হবে।’