নবসজ্জায় হ্যালোর নবযাত্রা

যাত্রা শুরুর নবম বর্ষে এসে নতুন সজ্জা পেয়েছে দেশের শিশু সংবাদিকদের সবচেয়ে বড় মঞ্চ হ্যালোর ওয়েবসাইট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2022, 04:14 PM
Updated : 31 May 2022, 05:12 PM

এই নতুন সাজে হ্যালোর সাবেক-বর্তমান শিশু সাংবাদিকরা যেমন উচ্ছ্বসিত, তেমনি রোমাঞ্চিত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী।

মঙ্গলবার বিকালে ঢাকায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সদরদপ্তরে তিনিই এ নতুন ওয়েবসাইটের উন্মোচন করেন। শিশু সাংবাদিকদের নিয়ে কেক কেটে উদযাপন করেন হ্যালোর নবযাত্রা।

তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, চতুর্থবারের মত নতুন নকশায় পাঠকের সামনে আসছে বাংলাদেশের প্রথম ইন্টারনেট সংবাদপত্র বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। তার অংশ হিসেবেই প্রথমে হ্যালোর নতুন ওয়েবসাইট উন্মোচিত হল।

”আমরা হ্যালো দিয়ে শুরু করলাম। আমরা হ্যালোকে নিয়ে অনেক কিছু সাহস করি, হ্যালো পেরে যাবে, হয়ে যাবে।… এখানেও তারা পথিকৃৎ।”

দেড় দশকের পথচলায় অনেক প্রথমের ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে ৩১ মার্চ বাংলাদেশে শিশু সাংবাদিকদের প্রথম ইন্টারনেট সংবাদপত্র ‘হ্যালো’ চালু করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। এই যাত্রায় সঙ্গী হিসেবে রয়েছে জাতিসংঘ শিশু তহবিল-ইউনিসেফ।

হ্যালোর জন্য সংবাদ সংগ্রহ থেকে পরিবেশন পর্যন্ত সব কাজেই যুক্ত রয়েছে শিশু ও কিশোর সাংবাদিকরা। তাদের সহযোগিতা ও নিয়মিত পরিচর্যা করেন একদল দক্ষ সম্পাদক।

সারাদেশে বিপুল সংখ্যক কর্মশালার মাধ্যমে প্রতি বছর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় হাজারো শিশুকে। সহজ ভাষায় শিশুরা যাতে সাংবাদিকতার খুঁটিনাটি শিখতে পারে, সেজন্য হ্যালো প্রকাশ করেছে ‘সাংবাদিকতার প্রথম পাঠ’।

শিশু সাংবাদিকদের প্রথম সংবাদপত্র হ্যালোর নতুন ওয়েবসাইট উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী৷

হ্যালোর নতুন ওয়েবসাইট উন্মোচনের আনন্দকে তৌফিক ইমরোজ খালিদী তুলনা করেন ঈদের আনন্দের সঙ্গে।

“নতুন ওয়েবসাইট হচ্ছে নতুন জামার মত, বিশেষ করে ঈদের দিনের নতুন জামার মত। ঈদের দিনে নতুন জামা পরতে খুব ভালো লাগত, এবং এই নতুন ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে নতুন জামা পরার মত আনন্দ অনেক দিন থাকবে।”

হ্যালোতে এখন ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের কাজ করার সুযোগ আছে। যারা ওই বয়স, অর্থাৎ শিশুর তকমা পেরিয়ে গেছে, তারাও যাতে চর্চা চালিয়ে যেতে পারে, সেজন্য নতুন সুযোগ তৈরির ভাবনার কথা বলেন তৌফিক ইমরোজ খালিদী।

“দুর্দান্ত সাংবাদিক, অসম্ভব আগ্রহ আছে কাজটি নিয়ে, শুধুমাত্র ১৮ পার হয়ে যাওয়ার কারণে তাকে কাজ করতে দেওয়া হবে না, এটা আমার কাছে অন্যায় মনে হয়, অযৌক্তিক মনে হয়। তাদের জন্য স্বতন্ত্র বিভাগ চালু করা যেতে পারে। চাইলে আরেকটি ওয়েবসাইটও চালু করা যেতে পারে।”

হ্যালোর নয় বছরের যাত্রাপথের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “আমারতো মনে হয়, এই তো সেদিন শুরু হল। ৯ বছরে বোধহয় আমরা হাজার শিশু সাংবাদিককে প্রশিক্ষণ দিয়েছি সারাদেশে। সেইসব শিশুরা এখন আর শিশু নেই। বিভিন্ন পেশায় গেছে, কেউ কেউ ছাত্র, পরিণত ছাত্র।”

হ্যালোর ওয়েবসাইটের নতুন রূপ উন্মোচনের পর উচ্ছ্বসিত শিশু সাংবাদিকরা কেক কটার পর তা খাইয়ে দেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীকে।

হ্যালোতে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে তরুণরা কর্মজীবনেও ভালো করছে বলে জানান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক।

তিনি বলেন, “হ্যালোর নতুন ওয়েবসাইট নিয়ে হয়ত উৎসাহ তোমাদের অনেকেরই আছে। আরও বাড়বে। নতুন ওয়েবসাইটে নিশ্চয় নতুন নতুন ফিচার যোগ করা হয়েছে। নতুন উদ্যমে, নতুন করে, নতুন উৎসাহ নিয়ে কাজ করবে।”

হ্যালোর সাবেক শিশু সাংবাদিকদের অনেকেই এসেছিলেন নতুন ওয়েবসাইট উন্মোচনের অনুষ্ঠানে। রেদোয়ানুর রহমান তাদের একজন।

সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করা এই তরুণ বললেন, “হ্যালোর শুরুর দিকে আমি কাজ করা শুরু করেছিলাম। এক সময় নিয়মিতই আসতাম। ছোট বয়স থেকে সাংবাদিকতার ধারণা দেওয়ার জন্য এটা চমৎকার জায়গা।

“কেবল সাংবাদিকতা নয়, অ্যাকাডেমিক ও নন-অ্যাকাডেমিক সবক্ষেত্রে হ্যালোর এই কাজের অভিজ্ঞতা যে কারও জন্য সহায়ক হবে। হ্যালো কাজ শেষ হলে প্রাক্তনদের ভুলে যায় না। তাদের সাথে সহযোগিতার সম্পর্ক রাখে, এটাতে অনেকে শেখার আছে।”

শৈশব বিদায় নিলেও হ্যালোর বাঁধনে তারা। হ্যালোর নতুন ওয়েবসাইট উদ্বোধনের ক্ষণটিতে তা্ই আনন্দের কমতি ছিল না সাবেক শিশু সাংবাদিকদেরও।

সাবেক শিশু সাংবাদিক রূপকথা রহমান ভর্তি হয়েছেন নিউ ইয়র্কের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি বলেন, “হ্যালো এখন অনেক পরিণত, একটা প্রক্রিয়া দাঁড়িয়েছে। আজকে নতুন সাইট উদ্বোধন হচ্ছে, এর ধারাবাহিকতায় আরও উন্নত হবে।”

হ্যালোতে এখন শিশু সাংবাদিক হিসেবে কাজ করছে সৈয়দা সাদিয়া আক্তার লিজা। নবম শ্রেণির এই শিক্ষার্থী বললো, হ্যালোতে কাজের সুযোগ পাওয়া তার জন্য ‘দারুণ এক অভিজ্ঞতা’।

“এখানে কেবল সাংবাদিকতা শেখানো হয় তা নয়, এর পাশাপাশি শুদ্ধ বাংলা লেখা ও কো-কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিজও শেখানো হয়। এর মাধ্যমে আমি নিজেকে ভালোভাবে উপস্থাপন করার সুযোগ পাই।”

অন্যদের মধ্যে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জিএম (অপারেশনস) শাহীনুল হুদা জুয়েল, দুই বার্তা সম্পাদক জাহিদুল কবির ও মুনীরুল ইসলাম, হেড অব টেকনোলজি জয়িতা তাসনিয়া এবং হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সম্পাদক সুলাইমান নিলয় উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।