একটি ব্যাংকের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, চিঠিতে ওই ১১ সাংবাদিকের নাম, সাংগঠনিক পদবী, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে ব্যাংক লেনদেনের যাবতীয় তথ্য চাওয়া হয়েছে।
১১ জনের তালিকার শুরুতেই রয়েছেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন এবং সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি বিএনপি সমর্থিত অংশের সভাপতি আব্দুল কাদের গণি চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সমর্থিত অংশের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপুর নাম রয়েছে তালিকায়।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের বিএনপি সমর্থিত অংশের সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন এবং বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সমর্থিত অংশের সভাপতি মোল্লা জালাল ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আব্দুল মজিদের ব্যাংক হিসাবের তথ্যও চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালীন নোমানী এবং সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খানের নাম রয়েছে ওই তালিকায়।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের চিঠিতে বলা হয়েছে, ওই ১১ জনের ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় তথ্য (কেওয়াইসি ফরম, লেনদেন বিবরণী এবং হিসাবের হালনাগাদ স্থিতিসহ) ১৮ সেপ্টেম্বরে মধ্যে পাঠাতে হবে।
কেন তাদের হিসাব তলব করা হয়েছে সে বিষয়ে বিএফআইইউর কারও বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি।
তারা কী বলছেন?
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকারের যে কোনো সংস্থা, যে কারো ব্যাংক হিসাবের তলব করতে পারে। তবে শুধুমাত্র সাংবাদিক নেতাদের তথ্য তলব করায় জনমনে একটা ভুল বার্তা যায়।”
আর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান “আমি জানি না কেন ব্যাংক হিসাব তলব করেছে। বলতে চাই- কার ব্যাংকে কী পাওয়া যাচ্ছে এটা জনসম্মুখ প্রকাশ করা হোক। এ উদ্যোগ প্রকৃত যারা টাকা পয়সা আছে তাদেরকে আড়াল করার চেষ্টা বলে মনে করি। এ উদ্যোগ মানুষকে হয়রানি করা।”
ঢাকা ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি মোল্লা জালাল দাবি করেন, তার হিসাবে কোনো ধরনের গরমিল পাওয়ার ‘সুযোগ নেই’।
আর ঢাকা ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের অন্য অংশের সভাপতি এম আব্দুল্লাহ বলছেন, এর পেছনে ‘ভিন্নমত দমনের চেষ্টা’ দেখতে পাচ্ছেন তিনি।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি আব্দুল কাদের গণি চৌধুরী বলেছেন, হিসাব তলব নিয়ে তিনি ‘নেতিবাচক’ কোনো চিন্তা করছেন না।
আর এ খবরে বিস্ময় প্রকাশ করে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালীন নোমানী তাদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য সংগ্রহ করার পর তা জনসম্মুখে প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন।
একই দাবি জানিয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান বলেছেন, “আমার ব্যাংক হিসাব খুঁজে যা পাওয়া যাবে তাতে রাষ্ট্রের লজ্জা পেতে হবে।”