২৩ অক্টোবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীই শুধু নয়, বাংলাদেশে ইন্টারনেট সংবাদপত্রেরও যাত্রা শুরুর দিন, বাংলাদেশে কোনো বার্তা কক্ষের ২৪ ঘণ্টা সচল থাকার সূচনা লগ্ন।
বদলে যাওয়া বাস্তবতায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কর্মীরা এবার দিনটি উদযাপন করলেন একেবারেই ঘরোয়াভাবে, ঢাকার মহাখালীতে নিজেদের বার্তাকক্ষে কেক কেটে আর স্মৃতিচারণ করে, যে বার্তাকক্ষ তাদের কাছে ঘরের চেয়ে কম কিছু নয়।
শুরুটা হয়েছিল ২০০৫ সালের প্রথমার্ধে। অন্যান্য বার্তা সংস্থার মতো ‘বিডিনিউজ’ তখন সংবাদ মাধ্যমগুলোর জন্য খবর সরবরাহ করত। দেশের অন্য সংবাদ সংস্থাগুলো টেলিপ্রিন্টারে খবর সরবরাহ করলেও বিডিনিউজ এ কাজটি শুরু করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে।
সেই নবযাত্রার রোমাঞ্চ এবং পরের ১৬৮ মাসের অভিযাত্রায় অনেক নতুন মাইলফলক পেরিয়ে আসার গল্প প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে নবীন-প্রবীণ সহকর্মীদের মনে করিয়ে দেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী।
যাদের কঠোর পরিশ্রমে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম আজ কোটি পাঠক, দর্শক, শ্রোতার আস্থার সংবাদমাধ্যম হয়ে উঠতে পেরেছে, তাদের সবাইকে তিনি ধন্যবাদ জানান।
যে কোনো পরিস্থিতিতে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের নীতিতে অবিচল থাকার প্রত্যয় ঝরে প্রধান সম্পাদকের কণ্ঠে।
যাদের ঘিরে প্রতিদিন তৈরি হয় সংবাদ, নানা ক্ষেত্রে যারা বাঁক বদলের সাক্ষী, সমাজের বিভিন্ন অঙ্গনের সেইসব রথী মহারথীরাও অন্য বছর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনন্দ উদযাপনে শামিল হন।
আর সহকর্মীদের মধ্যে যারা বার্তাকক্ষে উপস্থিত থাকতে পরেননি, তারাও অনেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন অনুষ্ঠানে। সবার আড্ডায়, গল্পে বার্তাকক্ষ পরিণত হয় মিলন মেলায়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সাবেক হেড অব কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড এডিটোরিয়াল পলিসি কোঅর্ডিনেটর গাজী নাসির উদ্দিন আহমেদ খোকন এখন দৈনিক দেশ রূপান্তরের যুগ্ম সম্পাদক। নিজের পেশাজীবনের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে কাটানোর অভিজ্ঞতার কথা তিনি অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, অন্য সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের মূল পার্থক্যটা ছিল ‘সাংবাদিকতার স্কুলিংয়ে’।
“আমার সাংবাদিকতার অনেক কিছুই তৌফিক ভাইয়ের হাত ধরে শেখা। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে আমি এখন না থাকলেও এ প্রতিষ্ঠানের শুদ্ধ সাংবাদিকতা করার যে স্পিরিট, সেটা এখনও ধারণ করি।”
খোকনের ভাষায়, “বাংলাদেশের অনেক সংবাদমাধ্যমে অনেকেরই সাংবাদিকতার জ্ঞানের সমস্যা আছে, সত্য প্রকাশের সাহসের সমস্যা রয়েছে; এখনও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম সেসব থেকে মুক্ত। সামনের দিনগুলোতে এই ধারা অব্যাহত থাকবে, সেই আশা আমি করি।”
আর অনুষ্ঠানে আসার আগেই এক ফেইসবুক পোস্টে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি লেখেন- “অনেক দিন তো হল। এখনো আমি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের নিউজরুমটা মিস করি। বহু আঘাতেও অবিচল আমার প্রিয় এই বার্তাকক্ষ। অভিনন্দন অবিচল ১৪!”
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের হেড অব ইংলিশ নিউজ অরুণ দেবনাথ নবযাত্রার সেইসব দিনে ছিলেন এ সংবাদমাধ্যমের বার্তা সম্পাদকদের একজন। সেসব দিনের নানা গল্প তিনি আজকের সহকর্মীদের শোনান।
একজন সংবাদকর্মী হিসেবে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে কাজ করার যে স্বাধীনতা পেয়েছেন, সে কথা তুলে ধরে অরুণ বলেন, “একজন মেধাবী সাংবাদিক সব সময় ভালো বস নাও হতে পারেন। কিন্তু তৌফিক ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে আমার ধারণাটা পাল্টে যায়। তিনি আমাদের ওপর কখনোই কিছু চাপিয়ে দেননি।”
এক যুগের বেশি সময় ধরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে আছেন রিয়াজুল বাশার, বর্তমানে তিনি ডেপুটি চিফ রিপোর্টারের দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি বলেন, “অনেক ঘাত-প্রতিঘাত এবং বৈরী পরিবেশের মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে হয়েছে। মানের ক্ষেত্রে আমরা কখনও মাথা নত করিনি।”
বর্তমানে একাত্তর টিভির সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ রাশেদ আহসান এক সময় ছিলেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের অপারেশন্স বিভাগের ম্যানেজার। এ প্রতিষ্ঠানের শক্তির জায়গাগুলো তুলে ধরার পাশাপাশি আগামী দিনের চ্যালেঞ্জগুলো নিয়েও তিনি বলেন।
সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চতুর্দশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী।
নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আসার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “সব আঘাত সামলে আমরা বার বার ঘুরে দাঁড়িয়েছি, আগামীতেও তাই করব।”