নঈম নিজাম ও পীর হাবিবের ব্যাংক হিসাবের তালাশ

বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম ও নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমানের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইনানশিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 June 2020, 12:59 PM
Updated : 18 June 2020, 07:44 AM

বিভিন্ন সময়ে নানা ভূমিকার জন্য আলোচিত এই দুই সাংবাদিকের লেনদেনের সব তথ্য, কেওয়াইসি (নো ইওর কাস্টমার) ফর্মসহ হিসাব সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য দেশের সব ব্যাংকগুলোর কাছে তলব করা হয়েছে বলে ফাইনানশিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিটের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, এটা ওপেন সার্চ করা হচ্ছে। আমরা সব ব্যাংকের কাছে তাদের দুজনের হিসাব সম্পর্কে সব ধরনের তথ্য চেয়েছি।”

তলব করা তথ্য ও নথির ভেতর রয়েছে যাবতীয় কাগজপত্রসহ হিসাব খোলার ফর্ম, কেওয়াইসি, ট্রানজেকশান প্রোফাইল, শুরু থেকে হালনাগাদ লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি।

বাংলাদেশ ফাইনানশিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট অর্থপাচার রোধ ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে কাজ করে।

তারা মূলত সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেন, অর্থপাচার, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে এবং আইন প্রয়োগকারী ও সরকারের অন্যান্য সংস্থাগুলোকে তা দিয়ে থাকে।

দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে ফাইনানশিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট।

নঈম নিজাম ও পীর হাবিবের ব্যাংক হিসাব কেন তলব করা হয়েছে জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, “কোনও এজেন্সি বা কোনও সংস্থা থেকে চাইলে কিংবা গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে আমরা ওপেন সার্চে যাই।

“ওপেন সার্চ হলে সব ব্যাংকেই তথ্য চাওয়া হয়। আবার কখনো যদি সুনির্দিষ্ট কোনো অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে সরকারের কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা সরকারি সংস্থা তথ্য চায়, তখন সুনির্দিষ্ট ওই ব্যাংকেই তথ্য চাওয়া হয়।”

কোন সংস্থা থেকে তাদের এসব তথ্য চাওয়া হয়েছে সে প্রশ্নের উত্তরে বিষয়টিকে ‘অতি গোপনীয়’ হিসেবে বর্ণনা করেন ওই কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে কথা বলতে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজামকে ফোন করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।

আর নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না, আপনার কাছ থেকে শুনলাম।”

২০০৭-০৮ সালে সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে এই দুই সাংবাদিকের ভূমিকা নিয়ে নানা আলোচনা রয়েছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক শাহজাহান সরদার তার ‘রিপোর্টার থেকে সম্পাদক’ বইতে লিখেছেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় ‘তারা দুজন’ একটি টিভি চ্যানেল করার জন্য আবেদন করেছিলেন।

শাহজাহান সরদারের পর বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক হন নঈম নিজাম। একই গ্রুপের মালিকানায় থাকা টেলিভিশন স্টেশন নিউজ টোয়েন্টিফোরেরও প্রধান নির্বাহী তিনি। আজকের কাগজ, ভোরের কাগজ, এটিএনসহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে তিনি কাজ করেছেন।

সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নঈম নিজাম।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিব ‘ওয়ান ইলেভেনের’ সময় পত্রিকায় কলাম লিখে আলোচনার জন্ম দেন। এর আগে যুগান্তর, বাংলাবাজারেও কাজ করেছেন তিনি।

বিভিন্ন সময়ে ফেইসবুকে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়েও নানাভাবে সমালোচিত হয়েছেন এই সাংবাদিক। জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, নাজিউর রহমান মঞ্জুসহ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে পীর হাবিবের ঘনিষ্ঠতাও এক সময় আলোচিত বিষয় ছিল।

এর আগেও তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনে ছিলেন। সেখান থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর কিছুদিন একটি অনলাইন পোর্টাল চালান। পরে আবার বাংলাদেশ প্রতিদিনে ফেরেন।