তারুণ্যেই চলে গেলেন ক্রীড়া সাংবাদিক অর্ণব মজুমদার

মাত্র ২৭ বছর বয়সেই চলে গেলেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ক্রীড়া বিভাগের সহ সম্পাদক অর্ণব মজুমদার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Dec 2019, 01:25 PM
Updated : 13 Dec 2019, 06:40 PM

তার কাকা নিখিল মজুমদার জানান, শুক্রবার দুপুরে অসুস্থ বোধ করায় ঢাকার দক্ষিণ খানের বাসা থেকে ওষুধ কিনতে ফার্মেসিতে গিয়েছিলেন অর্ণব। সেখানে সে চেতনা হারিয়ে পড়ে গেলে পুলিশের সহায়তায় তাকে স্থানীয় কেসি হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু জরুরি বিভাগের ডাক্তার জানান, অর্ণব আগেই মারা গেছে।

অর্ণবের বাবা দিলীপ কুমার মজুমদার মারা গিয়েছিলেন আগেই, মা ঝুনু রানী সরকার একজন অবসরপ্রাপ্ত নার্স, থাকেন নেত্রকোণার বাড়িতে। একমাত্র বোন সুভদ্রা উর্মিলা মজুমদার পেশায় চিকিৎসক, বর্তমানে ভারতের চেন্নাইয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নিচ্ছেন তিনি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ক্রীড়া বিভাগের সহ-সম্পাদক অর্ণব মজুমদারের মৃত্যুতে বিপিএল খেলা চলার মধ্যে শোক জানানো হয়।

ঢাকার দক্ষিণখানে ছোট কাকার বাসায় থেকে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার মধ্যেই সংবাদপত্রে কাজ শুরু করেন অর্ণব। খেলাধুলার প্রতি ভালোবাসা থেকেই বেছে নেন ক্রীড়া সাংবাদিকতা।

গত অক্টোবরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে যোগ দেওয়ার আগে তিন বছর দৈনিক সমকালের ক্রীড়া বিভাগে কাজ করেছিলেন তিনি।  

নিখিল মজুমদার জানান, দুপুরে মা কে ফোন করে পেট ব্যথার কথা বলেছিলেন অর্ণব। মা বলেছিলেন ওষুধ খেতে। পরে পুলিশের কাছ থেকে তারা অর্ণবের মৃত্যুর খবর পান।  

দক্ষিণখান থানার এসআই মো. ইব্রাহিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পশ্চিম মোল্লারটেকের রাজলক্ষ্মী মেডিকেল হলের মালিকের কাছ থেকে আমরা যতটুকু জেনেছি, ওষুধ কিনতে এসে রাস্তার ওপর পড়ে যায় অর্ণব। পরে আমাদের খবর দিলে আমরা হাসপাতালে নিয়ে যাই।”

কেসি হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. খালিদ হোসেন বলেন, “আমাদের এখানে ওকে নিয়ে আসা হয়েছিল বেলা ১টা ৪০ মিনিটে। তার আগেই আসলে মারা গেছে। এখানে কিছু করার ছিল না।”

এই চিকিৎসক বলেন, অর্ণবের রক্তচাপ কিছুটা বেশি ছিল বলে পরে স্বজনদের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন। সব কিছু দেখে মনে হয়েছে, হয়ত ‘হার্ট অ্যাটাকে’ মৃত্যু হয়েছে অর্ণবের।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান ক্রিকেট প্রতিবেদক আরিফুল ইসলাম রনি বলেন, “গতকাল রাতেও অর্ণব আমার সঙ্গে বিপিএলের প্রেসবক্সে ছিল। বিপিএল কভার করতে আগামী পরশু চট্টগ্রাম যাওয়ার কথা ছিল ওর। আজ মাঠে আসবে বলেছিল, কিন্তু আসেনি। পরে দুপুরে দুঃসংবাদটা পেলাম। আমি ভাবতেও পারছি না, কীভাবে কী হল।”

হাসপাতাল থেকে মরদেহ বুঝে নিয়ে শুক্রবার বিকালে নেত্রোকোণা সদরের নিখিলনাথ রোডে বাড়ির পথে রওনা হন অর্ণবের বড় কাকা প্রদীপ মজুমদার। তিনি জানান, শুক্রবার রাতেই তার ভাতিজার শেষকৃত্য হবে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের একজন মুখপাত্র বলেন, “হাসিখুশি অর্ণব ছিল সহকর্মীদের কাছে প্রিয় মুখ। ও দীপায়ন অর্ণব নামেও লেখালেখি করত। ওর এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে আমাদের। আমরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম পরিবার গভীরভাবে শোকাহত।”

অর্ণবের মৃত্যুতে সন্ধ্যায় বিপিএলের ম্যাচ চলাকালে মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের জায়ান্ট স্ক্রিনে শোক জানানো হয়।