সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচক: একমত নন তথ্যমন্ত্রী

প্যারিসভিত্তিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের করা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের যে চিত্র এসেছে তার সঙ্গে একমত নন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2019, 04:48 PM
Updated : 19 April 2019, 04:48 PM

তার দাবি, বাংলাদেশের গণমাধ্যম ‘স্বাধীনভাবে’ কাজ করছে।

রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের এই বার্ষিক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান এবার ১৮০ দেশের মধ্যে ১৫০তম। গত বছরের ১৪৬ তম অবস্থান থেকে চার ধাপ পিছিয়ে গিয়ে সাত বছরের মধ্যে সবচেয়ে বাজে অবস্থানে পৌঁছেছে বাংলাদেশ।

২০১৯ সালের ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স’বলছে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের অধিকারের প্রশ্নে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই সবচেয়ে পিছিয়ে আছে।

শুক্রবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করতে এসে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “দশ বছরে পত্রিকার সংখ্যা ৬০০ থেকে দ্বিগুণ বেড়ে ১২০০ হয়েছে, টেলিভিশনের সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে। সংবাদগুলোকে কোনো সেন্সরের ভেতর দিয়ে যেতে হয় না। অন্য সংস্থার র‌্যাংকিং হলে দেখা যাবে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক ভালো।”

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার অনেক পদক্ষেপ সরকার নিয়েছে মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আরও কাজ হবে।

রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের সূচকে প্রথম সারিতে বেলজিয়ামের নাম থাকার কথা উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, “আমি বেলজিয়ামে বহু বছর ছিলাম, সেখানে মাস্টার্স ও পিএইচডি করেছি। সেখানে ভুল সংবাদ বা কারো বিরূদ্ধে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করলে জরিমানাসহ নানা শাস্তির বিধান রয়েছে।

“আর ইংল্যান্ডে দেড়শ বছরের পুরনো পত্রিকা ‘নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ একটি ভুল সংবাদের জন্য জরিমানা পুরো না দিতে পেরে বন্ধই হয়ে গেছে। আমাদের দেশে এমন কোনো ঘটনা এখনো ঘটেনি এবং আমি এই র‌্যাংকিংয়ের সাথে একমত নই।”

সাতটি মাপকাঠিতে বিচার করে একটি দেশের সংবাদমাধ্যম কতটা স্বাধীনতা ভোগ করছে তা বোঝার চেষ্টা করেছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস।

এই সাতটি মাপকাঠি হল- সংবাদমাধ্যমে বহু মতের প্রকাশ, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ, স্ব-আরোপিত সেন্সরশিপ, আইনি কাঠামো, সংবাদমাধ্যমের কাজে স্বচ্ছতা, অবকাঠামো, সংবাদকর্মীদের ওপর নিপীড়ন।

সবগুলো মাপকাঠির স্কোরের গড় করে তৈরি করা হয়েছে একটি দেশের গ্লোবাল স্কোর। ১০০ পয়েন্টের এই সূচকে যে দেশের স্কোর যত কম, সে দেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা তত বেশি।

এ বছরের সূচকে ১৫০তম অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের স্কোর দেখানো হয়েছে ১০০ এর মধ্যে ৫০ দশমিক ৭৪। গতবছর বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৪৮.৬২, আর বিশ্বে অবস্থান ছিল ১৪৬ নম্বরে।

গত ছয় বছরের ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৪ থেকে ১৪৬ এর মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল। এবার তা এক ধাক্কায় চার ধাপ নেমে এসেছে।